ঢাকা, শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১লা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলৎকার: কানাইঘাটের কাদিরকে কান ধরে উঠবসের শাস্তি

ওসমানীনগর প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ১৭ জুন ২০২২ ০৩:৩৮:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

সিলেটের ওসমানীনগরে এক মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিশু শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসার সুপার কর্তৃক বলৎকারের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ ঘটনায় এই মাদ্রাসা সুপারকে ৩০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে এবং ২২ হাজার টাকা মুসলেকার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে বলৎকারের বিচারের মাধ্যমে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত করেছেন মাদ্রাসার কমিটির সদস্য সহ স্থানীয় গ্রামবাসীরা।

 

শুধু তাই নয় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মাদ্রাসার অন্য একজন শিক্ষক অভিযুক্ত এই শিক্ষককে উপজেলার গোয়ালাবাজার নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে পালাতে সহযোগিতা করেন। ঘটনাটি উপজেলার সাদিপুর ইউপির নুরপুর গ্রামের নুরপুর হাফিজিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসায়।

 

শিক্ষার্থী বলৎকারের ঘটনায় অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপারের কান ধরে উঠবস করার ভিডিওটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের মুঠো ফোনসহ পুলিশের নিকট ছড়িয়ে পরেছে। অভিযুক্ত মো. আব্দুল কাদির সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লনটির মাটি গ্রামের মৃত নূরুল হকের ছেলে ও উপজেলার সাদিপুর ইউপির নূরপুর হাফিজিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার সুপার।

 

স্থানীয় সূত্রে জানান যায়, গত শনিবার নুরপুর হফিজিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ১১ বছরের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বলৎকার করেন মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কাদির। বিষয়টি নির্যাতিত শিশু শিক্ষার্থী তার পিতা সহ পরিবারের লোকজনকে অবহিত করলে বলৎকারের শিকার হওয়া শিশুর পিতা মাদ্রাসার কমিটি সহ সংশ্লিষ্ট নুরপুর গ্রামের লোকজনকে অবহিত করেন। তাৎক্ষনিক ভাবে নির্যাতিত শিশুকে তার পিতার মাধ্যমে উপজেলার তাজপুরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে গত রোববার মাদ্রাসা কমিটি সহ গ্রামবাসীরা মাদ্রাসার অফিসে অভিযুক্ত সুপার আব্দুল কাদিরকে সবার সম্মুখে ৩০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে এবং তার নিকট থেকে ২২ হাজার টাকা মোসলেকা আদায় করে চিকিৎসার জন্য এই শিশু শিক্ষার্থীর পিতাকে প্রদান করা হয়।

 

পরে একজন শিক্ষকরে মাধ্যমে সুপার আব্দুল কাদিরকে গড়িতে তুলে পালিয়ে যেতে ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। শিক্ষকের কান ধরে উঠবস করার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় একজন কান ধরে উঠবস গুনছিলেন। এই বিচারের অংশ নেন নুরপুর গ্রামের ইয়াওর আলী, আবিদ উল্লাহ, আফতাব হুজুর ও তজমুল আলী গং আরও কিছু লোক। ঘটনাটি ওসমানীনগর থানা পুলিশ অবহিত হবার পর ওসমানীনগর থানার এসআই সুবিনয় বৈদ্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে ঘটনার ৪দিন অতিবাহিত হবার পর এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

 

বিষয়টি সালিশকারী নুরপুর গ্রামের ইয়াওর মিয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পর তাকে আমরা গ্রামবাসী সহ কমিটির সবাই মিলে সাময়িক বরখাস্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

 

অভিযুক্ত সুপার আব্দুল কাদিরের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

 

ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাঈন উদ্দিন বলেন, ঘটনার খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বাদী মামলা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।