পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার এস আই আবুল হোসেন এর বিরুদ্ধে মহিষ বিক্রির টাকা আত্মসাৎ এর দায়ে আইনী সহায়তা চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছে এক ভুক্তভোগী নারী। ঐ নারীর নাম মোসাঃ বেবী আক্তার। মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ভাজনা কদমতলার মৃত ইউনুছ মুসুল্লীর মেয়ে সে। অভিযোগে সূত্রে জানা যায় , মোসাঃ বেবী আক্তার একজন গার্মন্টস কর্মী ছিলেন এবং যার বেতনের টাকায় চলত ইউনুছ মুসুল্লীর সংসার। একপর্যায় তাঁর উপার্জিত টাকা দিয়ে পিতাকে দুইটি মহিষ ক্রয় করে দেন। তাঁর পিতা লালন পালন ও পরিচর্যা করলে মহিষগুলি বাচ্চা দিলে ক্রমশঃ সাতটি মহিষে পরিণত হয়। দুইি মহিষ অসুস্থ হয়ে মারা গেলে অবশিষ্ট পাঁচটি থেকে মোসাঃ বেবী আক্তার দুইটি মহিষ বিক্রয় করেন। অবশিষ্ট তিন টি মহিষ তাঁর পিতা লালন পালন করতে থাকেন। এরই মধ্যে গত রমজান মাসে তাঁর পিতা মৃত্যুবরণ করায় সংসার দেখাশুনার জন্য তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। অন্যের ঘরে কাজ করা,হাস মুরগী লালন পালন ও মহিষগুলোর পরিচর্চা করতে থাকেন তিনি। মহিষ পালন পুরুষের কাজ যা বেবী আক্তারের পক্ষে দুঃসাধ্য ব্যাপার হওয়াতে গত কুরবানি ঈদের আগে উপজেলার দেউলী বাজারে গিয়ে ৩,৬৫.০০০/-(তিন লক্ষ পয়ষট্রি হাজার) টাকায় মহিষ বিক্রি করেন তিনি।
জাহাঙ্গীর ও আলমগীর নামে তাঁর দুই ভাই মহিষ বিক্রির টাকা দাবি পূর্বক মির্জাগঞ্জ থানায় অভিযোগ করে। এস আই আবুল হোসেন দেউলী বাজার সংলগ্ন ক্রেতার বাড়ি থেকে মহিষ আনতে যায়। ক্রেতা তাৎক্ষণিক ফোন করলে বেবী আক্তার সেখানে গিয়ে বাঁধা প্রদান করে। ঘটনাস্থলে এস আই আবুল বেবী আক্তারের উপর চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ এক পর্যায়ে জনসম্মুখে চড় থাপ্পর দেয়। তিনি মহিষের রশি ধরলে এস.আই আবুল হােসেন তাকে লাথি মেরে ফেলে দিলে তাঁর পায়ের কাঁচা নখ উঠে যায়। কোন প্রকার কারণ ছাড়াই এস আই আবুল হােসেন মহিষগুলি নিয়ে আসে। যার কারনে বেবী আক্তার ক্রেতাকে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন।
এখানেই শেষ নয়,ঘটনার পরের দিন স্থানীয় আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে মোসাঃ বেবী আক্তারকে থানায় আসতে বলা হলে তিনি সন্ধ্যা নাগাদ এসআই আবুল হােসেন এর সাথে দেখা করেন। তখন সে ৫০.০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা দাবি করে এবং যে শর্তে মহিষ ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান। কিন্তু বেবী বেগম টাকা দিতে অস্বীকার করলে দুই দিন পরে এস,আই আবুল হােসেন স্থানীয় মােঃ আলমগীর হােসেন এর জিম্মায় পুনরায় বিক্র করার জন্য মহিষ দিয়ে দেয়। ৩,৮৫,০০০/-(তিন লক্ষ পচাশি হাজার) টাকায় মহিষ বিক্রি করে মাত্র ১,০০ ,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা একটি সমবায় সমিতিতে মোসাঃ বেবী আক্তারের নামে জমা করে তাঁরা। বাকি টাকা উক্ত আলমগীর সহ এস,আই মোঃ আবুল হোসেন ভাগ বাটোয়ারা করে এবং ঐ বিষয় কোন রকম বাড়াবাড়ি বা কারো সাথে যেন বলা না হয় এজন্য তাকে নানামুখি হুমকি প্রদান করা হয়।
অভিযোগের শেষে উল্লেখ করা হয়। মোসাঃ বেবী আক্তার অভিযোগ করবেন বলে প্রস্তুতি নিলে ২৯ আগস্ট রাতে এস আই আবুল হোসেন তাঁর কাছে গিয়ে ৪০ ,০০০/-(চল্লিশ হাজার) টাকা দেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই আবুল হোসেন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহিষ আটক করে দেউলি থেকে থানায় এনে ২ পক্ষকে ডেকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ মীমাংসার জন্য দিয়ে দেওয়া হয়।এখানে আমার কোন দায়বদ্ধতা নেই। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সালিশি ব্যবস্থায় আমি জড়িত ছিলাম না।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন, উক্ত ঘটনার সময় আমি এ থানায় যোগদান করিনি, তাই আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না, অভিযোগ সম্বন্ধে আমার জানা নেই। যদি অভিযোগ হয়ে থাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।