রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর নেতাকর্মীদের চাপে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। নৌকার প্রার্থীর নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র-বিদ্রোহী প্রার্থীরা হত্যার হুমকি, প্রচার মাইকে বাধা ও পোস্টার ছেঁড়া ফেলার একাধিক লিখত অভিযোগ নির্বাচন অফিসার ও থানায় দায়ের করেছেন। স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা জানান, রাতে হেলমেট বাহিনী মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের লাগানো পোস্টার ছেঁড়ে ফেলছে।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে উপজেলার ৬ ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ২৮ নভেম্বর। এখানে চেয়ারম্যানপদে ১৯ জন, সংক্ষিত নারী অাসনে ৬০ জন ও সাধারণ সদস্যপদে ১৮৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ধুরইল ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অানারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. কাজিম উদ্দিন। এই ইউনিয়নের প্রচার প্রচারণা ও পোস্টার লাগাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত নৌকার প্রার্থীর নেতাকর্মীদের কাছে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নে নৌকার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন সংসদ সদস্য মো. অায়েন উদ্দিনের অাপন বড় ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. অাজাহারুল ইসলাম বাবলু। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অানারস প্রতীক নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মো. অাফজাল হোসেন বকুল ও মোটরসাইকেল প্রতীকে নির্বাচন করছেন মো. তাজরুল হক দেওয়ান। তারাও প্রচার প্রচারণা ও পোস্টার লাগাতে করতে গিয়ে নৌকার প্রতীকের নেতাকর্মীদের কাছে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন।
রায়ঘাটি ইউনিয়নে নৌকার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন নতুন মুখ গত নির্বাচনে অাওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছেলে মো. বাবলু হোসেন। বিদ্রোহী প্রার্থী শ্রী সুরঞ্জিত সরকার (চশমা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো.রোস্তম অালী (ঘোড়া)। এই দুই প্রার্থীকে নৌকার প্রার্থীর কর্মীরা নানা ভাবে হুমকি প্রদান করছেন। বিদ্রোহীর পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগে নির্বাচন অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মৌগাছি ইউনিয়নে নৌকার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. অাল অামিন বিশ্বাস। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন মো. হারেছ অালী। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অানারস প্রতীক নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো. অাবুল হোসেন খান (চশমা)। এই ইউনিয়নে কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
বাকশিমইল ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মো. অাব্দুল মান্নান ও বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. অাল মোমিন শাহ গাবরুর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনার পর পুলিশ প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেয়ায় তেমন অার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু নৌকার কর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রচার প্রচারণায় বাধা ও পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ এনে নির্বাচন অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জাহানাবাদ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মো. হযরত অালীর নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি, প্রচার মাইকে বাধা, পোস্টার ছেঁড়ার একাধিক অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মো. অাবদুল লতিক (ঘোড়া)। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমন আশ্বাস পেয়েই তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু শুরু থেকে যেভাবে তাঁকে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে, তাতে নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। নির্বাচনি মাঠে থেকে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. এমাজ উদ্দিন খান (অানারস), এসএম মতিউর রহমান (চশমা), মো. দেলোয়ার হোসেন (লাঙ্গল) মো. শাহাবুদ্দিন মোল্লা (মোটরসাইকেল)।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনি বিষয় নিয়ে কয়েকটি থানায় অভিযোগ হয়েছে। সেগুলো তদন্ত করা হচ্ছে।
প্রচার মাইকে বাধার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।