জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জেবউননেছা।
গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকাল চারটার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে বাইরে থেকে আওয়ামীপন্থি লোকজন নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমায়েতের পরিকল্পনা করেছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের গুটিকয়েক শিক্ষক। গত ১৩ আগস্ট অনলাইনে (জুম) অনুষ্ঠিত এক মিটিংয়ে এমন পরিকল্পনা করা হয়।
উক্ত মিটিংয়ে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এম এ মামুন সভাপতিত্ব ও সদস্য-সচিব অধ্যাপক বশির আহমেদ সঞ্চালনা করেন। মিটিংয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক শাহেদুর রশিদ, অধ্যাপক জেবউননেছা সহ ২৫ জনের অধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেছিল বলে সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে বাইরে থেকে লোকজন এনে জমায়েতের কথাটি জানতে পারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার অধ্যাপক জেবউননেছা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন এমন খবর শুনে তার বিভাগে প্রতিবাদ জানাতে যান শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভাগীয় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বিভাগের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের আন্দোলন না করার অনুরোধ জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সমাজবিজ্ঞান অনুষদের নিচে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে অধ্যাপক জেবউননেছা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সহায়তায় নিচে নামলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্দেশ্য করে ‘খুনি জেবউননেছা’, ‘জেবউননেছার দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেয়। এসময় অধ্যাপক জেবউননেছাকে মুখ ঢেকে একটি মাইক্রোতে উঠে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জেবউননেছা তার বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সহায়তায় বিকাল চারটার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের প্রাঙ্গণ দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় একদল শিক্ষার্থী তাকে উদ্দেশ্য করে দুয়োধ্বনি দিতে থাকেন। এসময় শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে অপেক্ষারত একটি গাড়িতে করে দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন তিনি।
ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ১৭ জুলাই অধ্যাপক জেবউননেছা কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে ধিক্কার জানিয়েছেন। তিনি সেদিন শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার মদদ দিয়েছেন। এখন ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে ১৫ আগস্ট বাইরে থেকে লোকজন এনে জমায়েতের পরিকল্পনা করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় মদতদাতাদের এই ক্যাম্পাসে আমরা দেখতে চাই না।
জমায়েতের পরিকল্পনার বিষয়ে অধ্যাপক জেবউননেছার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মিটিংয়ে কয়েকটা কথা বলার জন্য উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমি এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা করিনি। বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের যে সকল শিক্ষক ষড়যন্ত্র করে সাধারণ শিক্ষকদের ফাঁসানোর জন্য চেষ্টা করে তাদের প্রতি আমি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করি।