শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রথম বর্ষের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা ড্রপ দেয় সিনিয়রদের কুপরামর্শে এমন মন্তব্য করেছেন ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল হোসাইনী।
রবিবার (২০শে মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভর্তিকৃত নতুন শিক্ষার্থীদের দুই ভাগে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় ‘এ’ ইউনিট ও বেলা দুইটায় ‘বি’ ইউনিটের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, তোমাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য আমারা সবাই তোমাদের পাশে আছি। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষকসহ সকলের সহযোগিতায় চার বছরের সেশনজন শূন্যের কোটায় নিয়ে এসেছি। আমরাই করোনা মহামারিতেও শিক্ষাক্রম অব্যাহত রাখি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আমাদের অবস্থান প্রথম। দেশের প্রায় দুইশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের অবস্থান তৃতীয়। আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত না হলে আমরা প্রথম হবো। তবে এজন্য তোমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর এখন স্বাধীন। তবে স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতা নয়। স্বাধীনতার সাথে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। আমরা অবশ্যই স্বাধীনভাবে কাজ করব। তবে সবকিছুই শৃঙ্খলার মধ্যে হতে হবে। স্বাধীনতা পেয়ে আমরা সবাই যদি যেভাবে খুশি সেভাবে চলতে থাকি তাহলে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য আবাসিক হল নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে সৈয়দ মুজতবা আলী হলে আরও পাঁচশত ছাত্রের আবাসনের ব্যবস্থা হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে ছাত্রীদের জন্য আরও তিনটি হল নির্মাণ করা হবে। ফলে শতভাগ ছাত্রী আবাসিক সুবিধা পাবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এখনো অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে পারিনি। তোমাদের মেধা ও আমাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা সে মুক্তি অর্জন করব।
ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল হোসাইনি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কেউ ড্রপের কথা চিন্তা করবে না। সিনিয়ররা কুপরামর্শ দিয়ে থাকে ড্রপ দেয়ার জন্য। সর্বশেষে তিনি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান।
এছাড়াও ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মুশতাক আহমদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন স্কুল অব ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের ডিন প্রফেসর ড. মো. রাশেদ তালুকদার, স্কুল অব এপ্লাইড সায়েন্সেস এন্ড টেকনোলজির ডিন প্রফেসর ড. মো. আরিফুল ইসলাম, স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেসের ডিন প্রফেসর ড. মো. কামরুল ইসলাম, স্কুল অব এগ্রিকালচার এন্ড মিনারেল সায়েন্সেসের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রেদওয়ান। স্কুল অব সোস্যাল সায়েন্সেসের ডিন প্রফেসর দিলারা রহমান এবং স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট এন্ড বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের ডিন প্রফেসর ড. মো. খায়রুল ইসলাম।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা অফিসের পরিচালক প্রফেসর আমিনা পারভীন, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর জনাব আবু হেনা পহিল, যৌন হয়রানি অভিযোগ কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. নাজিয়া চৌধুরী এবং রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন। নবীনদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী অভিষেক দাস ও নাইলা নওশীন রহমান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আর্কিটেকচার বিভাগে সহকারী অধ্যাপক জান্নাত আরা দিলশাদ সঙ্গী ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. সিয়ামুল বাশার।