ঢাকা, শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শেরপুরে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের দ্বন্দ্বের জেরে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

তারিকুল ইসলাম, শেরপুর প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৪ অগাস্ট ২০২২ ০৭:৩৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

শেরপুরে ঘুষ, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি ও হুমকি নিয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারদের দ্বন্দ্বের জেরে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর অস্ত্র ঠেকিয়ে বিল নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারূ পক্ষে সেলিম উদ্দিন তরফদার সুজন জেলা পরিষদ হল রুমে সংবাদ সম্মেলনে জানান, তার কাছে পিস্তলের কোনো লাইসেন্স নেই, পিস্তলও নেই। তার আছে লাইসেন্স শটগান, সেটা বাসায় রেখেছেন।

 

এর আগে, সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুর্নিতীবাজ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বদলির দাবিতে মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ঠিকাদারগণ। এরপর মঙ্গলবার মানববন্ধনের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

 

বুধবার দুপুরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঠিকাদার সমিতির পক্ষ থেকে ওই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ফের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে লিখিত বক্তব্য রাখেন সেলিম উদ্দিন তরফদার সুজন। পরে তিনিসহ অন্যান্য ঠিকাদাররা উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। সোমবার ঠিকাদার সমিতির মানববন্ধন ও স্মারকলিপিতে বলা হয়, জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান একজন দুর্নিতীবাজ ও ঘুষখোর। তিনি নির্ধারিত অফিস পিসি ছাড়াও প্রতিটি কাজে নানা তালবাহানা করে ঘুষ নেন। ঘুষ না পেলে ঠিকাদারদের বিল আটকে দেয় এবং বিল কাটছাঁট করে কমিয়ে দেন। এতে অনেক ঠিকাদার বিল না পেয়ে পথে বসে যাচ্ছে। এমনকি তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী জেলা জামালপুর হওয়ায় কিছু ঠিকাদারদের সাথে সে অংশিদার ভিত্তিতে গোপনে কাজ করে। এসময় তারা বেশ কিছু উন্নয়ন কাজের গাফিলতির কথা উল্লেখ করেন।

 

তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান তার কার্যালয়ে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ঠিকাদার সমিতির সভাপতি ছানুয়ার হোসেন ছানু, তার সহযোগী হাবিবুর রহমান হাবিব ও ঠিকাদার সেলিম উদ্দিন তরফদার সুজন তাকে এখানে যোগ দেওয়ার পর থেকেই কাজ না করে জোরপূর্বক বিল পরিশোধের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। ঠিকাদার সেলিম ঝিনাইগাতি ও শ্রীবরদী উপজেলা প্রকৌশলীকে পিস্তল ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও অফিসে এসে মাঝে মাঝেই কর্মচারীদের গালাগালি করেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার বিষয়টি আগেই তাকে হুমকি দিয়ে জানানো হয়েছে। ২০১৩ সালে শেরপুরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলী পদে চাকরি করার সময় তারা বিভিন্ন অবৈধ বিল-ভাউচারে সই করার জন্য অস্ত্র ঠেকিয়েছিল। ওই ঠিকাদাররা ইতোপূর্বে জেলার বাইরের এক ঠিকাদারকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে জোরপূর্বক কাজ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন।

 

নির্বাহী প্রকৌশলীর এমন অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার সুজন বলেন, তার কাছে পিস্তলের লাইসেন্সই নেই, পিস্তল পাবেন কই? তার কাছে লাইসেন্স করা শটগান আছে। সেটা বাসায় রেখেছেন। তাকে অস্ত্র দেখানোর প্রশ্নই আসে না। অপকর্ম ঢাকার জন্য তার বিরুদ্ধে এই ভিত্তিহীন কথা বলছে। অথচ তিনিই তার পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে ওই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মুছা নামে এক ঠিকাদারকে দিয়ে নিজেই ঠিকাদারি কাজ করার অভিযোগসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ আনেন।