শেরপুরে স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করে নিজে কিটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে অসুস্থ অবস্থায় শেরপুর সদর হাসপাতালে পুলিশের তত্ত্বাবধানে ভর্তি রয়েছেন এক পাষণ্ড স্বামী। পারিবারিক কলহের জের ধরে ২৯ আগস্ট সোমবার ভোর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর সদর উপজেলার বয়রা পরানপুর গ্রামে। নিহত স্ত্রীর নাম পারভীন বেগম (৩২) ও তার পাষন্ড স্বামীর নাম মো. শফিকুল ইসলাম (৩৮)।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার বয়ড়া পরানপুর গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে পারভীন বেগমের সাথে একই ইউনিয়নের হাওড়া আমতলা গ্রামের জনৈক মন মিয়ার ছেলে মো. শফিকুল ইসলামের সাথে ১০ বছর পূর্বে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে কন্যা সুমি (১০) ও ছেলে পারভেজ (৭) নামে দুই সন্তান জন্ম গ্রহণ করে।
এদিকে গত কয়েক মাস ধরে স্ত্রী পারভীন বেগম ও স্বামী শফিকুল ইসলামের মধ্যে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী পারভীন বেগম দুই মাস পূর্বে স্বামীর বাড়ি হাওড়া আমতলা গ্রাম থেকে বয়ড়া পরানপুর পিত্রালয়ে চলে আসেন। পরে পৌরসভার নাগপাড়া মহল্লার আল বারাকা প্রাইভেট হাসপাতালে আয়া পদে চাকুরি নেয়। রোববার রাতে শফিকুল ইসলাম শ্বশুর বাড়িতে আসে এবং রাতের খাবার শেষে তারা স্বামী স্ত্রী শুয়ে পড়েন। সোমবার ভোররাতে কোন এক সময় ঘুমন্ত পারভীন বেগমকে পাষন্ড স্বামী শফিকুল ইসলাম ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে (জবাই) করে হত্যা শেষে সে নিজে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
এদিকে সোমবার সকালে শাশুড়ি জামেলা বেগম তার মেয়ে পারভীন বেগম এবং জামাই শফিকুল ইসলামের কোন সারা শব্দ না পেয়ে ঘরে উকি দিয়ে দেখতে পান তার মেয়ে পারভীন বেগম জবাই করা অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে এবং শফিকুল ইসলামের মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। এ অবস্থায় সে ডাক চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন জড়ো হয়।
পরে পুলিশে খবর দেয়া হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদলসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পারভীন বেগমের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মর্গে পাঠান এবং শফিকুল ইসলামকে চিকিৎসার জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল হত্যাকান্ডের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে হত্যার রহস্য উদঘাটনে গভীর অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।