ঢাকা, বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সন্তানকে জন্ম দিয়েই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মা

সাঈদ মেনন, বরিশাল : | প্রকাশের সময় : সোমবার ২২ নভেম্বর ২০২১ ০৭:১৭:০০ অপরাহ্ন | শিক্ষা

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় সন্তান জন্ম দিয়ে কয়েক ঘন্টা পর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে প্রসুতি মা। স্কুল ছাত্রীর এমনকান্ডে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার উপজেলার চাখার ফজলুল হক ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে। সন্তান জন্ম দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ওই ছাত্রী হলো দোলা আক্তার। সে উপজেলার চাখার ওয়াজেদ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। চাখার ইউপির খলিশাকোঠা গ্রামের মো. দুলাল হাওলাদারের কন্যা সে। নবম শ্রেনীতে পড়ার সময় উপজেলার দাসের হাট এলাকার মো. ইউসুফ আলীর ছেলে মো. আকাশের সাথে বিয়ে হয়। 

সন্তান জন্ম দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ওই ছাত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা। তবে স্কুল শিক্ষার্থীর সন্তান প্রসবের ঘটনায় বাল্য বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় বিব্রত অভিভাবকরা। 

উপজেলার চাখার ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ফারুক হোসেন স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, প্রসুতি মা দোলা অন্যান্য এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। রোববারের আগের পরীক্ষা ঠিকভাবেই দিয়েছেন। তবে রোববারের পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘন্টা পূর্বে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭ টার দিকে প্রসব বেদনা উঠে। তখন চাখার ১০ শয্যা হাসপাতালের এক সেবিকার সাথে যোগাযোগ করেন দোলার স্বজনরা। এরপর তার সহযোগিতায় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় দোলা। কিছুক্ষন পর দোলা শারিরীকভাবে সুস্থ বোধ করলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে চান। পরে পরীক্ষা পরিচালনা সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে দোলা যথাসময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। 

তিনি জানান, বর্তমানে ছেলে সন্তান ও তার মা দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

চাখার ফজলুল হক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ও এসএসসি পরীক্ষার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের সচিব মোঃ জিয়াউল হাসান জানান, চাখার হাসপাতালের একজন নার্স ও দোলার স্বজনরা পরীক্ষা শুরুর কিছু সময় আগে বিষয়টি জানিয়েছে। ছাত্রীর শারিরিক অবস্থা বিবেচনা করে পরীক্ষায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু ছাত্রী নিজেকে সুস্থ দাবি করে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আকুতি জানায়। পরে তার এক খালাতো বোনকে সাথে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে সে। এরপর সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত দেড় ঘন্টার নির্ধারিত সময়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের পরীক্ষায় স্বাভাবিক ভাবেই অংশগ্রহন করে ওই শিক্ষার্থী। তার মানসিক মনোবল দেখে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলেই অবাক হয়েছি। 

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার্থীর স্বামী কেন্দ্রের বাহিরে ছিলেন। তার অন্য স্বজনরা সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানকে তাদের কাছে রেখেছেন।