ঢাকা, বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫শে পৌষ ১৪৩১

সাভারে 'ছাত্রলীগ ও কাউন্সিলর' গ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : সোমবার ১২ জুন ২০২৩ ০১:৫৭:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
 
 
ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু ভরাটের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও কাউন্সিলর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।এসময় কাউন্সিলর গ্রুপের নারীসহ চারজন এবং ছাত্রলীগ গ্রুপের একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।তাদের সবাইকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 
রবিবার(১১ জুন)রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সাভার পৌরসভার বাড্ডা অগ্রণী হাউজিং সোসাইটি এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 
 
আহতরা হলেন,সাভার পৌরসভার বক্তারপুর পোড়াবাড়ি এলাকার নূরু মিয়ার ছেলে মো. সুজন মিয়া (৩৫),কাঞ্চনপুর এলাকার অলি মিয়ার ছেলে মিনারুল(১৮),বেদে পাড়া এলাকার আরশ আলীর মেয়ে নাসিমা (৩০) ও ছালাম মিয়া(৩৮)। তারা সবাই সাভার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রমজান আহমেদের অনুসারী। তারা সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে সুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকের অনুসারী আহত নজরুল ইসলাম (৩৬) প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। 
 
এঘটনায় মো. সুজন মিয়া বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন। 
 
অভিযোগপত্রে সাভার পৌরসভার আরাপাড়া এলাকার ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ আলীর ছেলে ও সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক(৩৫), একই এলাকার মতিন মিয়ার ছেলে ও সাভার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন টিপু(৩০),নজরুল(৩৬), আল আমিন (৩২), আরিফ(২৪),শামীম(২৭) ও শিমুল(৩০)এছাড়াও অজ্ঞাত ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
 
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাভার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের বাড্ডা ভাটপাড়া এলাকার সুগন্ধা হাউজিং সোসাইটি সংলগ্ন আইউব আলীর মালিকানাধীন খালেক চেয়ারম্যানের পুকুরে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু ভরাট করে আসছেন কাউন্সিলর রমজান আহমেদের অনুসারী সুজন মিয়া, জুয়েল ও রায়হান। গত কয়েকদিন যাবত তাদের কাছ থেকে সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান ও তার অনুসারীরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় রবিবার রাত ৮ টা ৪৫ মিনিটে আতিকুর রহমান, টিপু, নজরুল, আল আমিন, আরিফ, শামীম, শিমুলসহ ২৫/৩০ জন বালু ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেয়। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে কাউন্সিলর রমজান আহমেদের অনুসারী সুজন মিয়া হাজির হয়ে কাজ বন্ধের কারণ জানতে চাইলে সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকসহ তার সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় সুজন মিয়াকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আতিকের সমর্থকরা। তাকে উদ্ধারে মিনারুল, ছালাম মিয়া ও নাসিমা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর ও জখম করা হয়। এ খবর জানাজানি হলে রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর রমজানের পক্ষের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
এবিষয়ে সাভার পৌরসভার কাউন্সিলর রমজান আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত ১ নং ওয়ার্ডের মানুষকে জিম্মি করে জোরপূর্বক জমি দখল, মাটি ভরাট ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ কামিয়েছেন সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান। আজকেও ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় নারী সহ ৪ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। 
 
সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আগামীকালকের মধ্যেই বিষয়টির সমাধান করা হবে। কোন আহত আছে কি.? জানতে চাইলে তিনি বলেন,দুই পক্ষকে থামাতে গিয়ে নজরুল আহত হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সে এখন বাসায় আছে।
 
এব্যাপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা পিপিএম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।