সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে আহবায়ক কমিটি গঠনের দাবিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে খোলা চিঠি দিয়েছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান।
সোমবার সকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর মাধ্যমে এই খোলা চিঠি প্রেরন করা হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন এবং তার ফেসবুকে এই খোলা চিঠি পোস্ট করেছেন।
খোলা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র কাউন্সিলরগনসহ গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আপনার(তারেক রহমান) সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারী সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র পদ প্রত্যাশী এবং জেলা, পৌর-থানা-উপজেলার নেতাকর্মীদের মনে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। একই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের আটটি জেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলেও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র বর্তমান কমিটি বহাল রেখেই সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে দলের মধ্যে একধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
নেতা কর্মীদের প্রশ্ন সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি হওয়ার পর বর্তমান মেয়াদ উর্ত্তীণ জেলা বিএনপি'র কমিটি বহাল আছে! নাকি গঠনতন্ত্রের কোন ধারা অনুযায়ী কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে? না হয়ে থাকলে জেলা বিএনপি'র কমিটি বিলুপ্ত করে অল্প সময়ের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র আহবায়ক কমিটি গঠন করা উচিত বলে মনে করছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীবৃন্দ।
জেলা বিএনপি'র বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অনুমোদিত সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র ১৮টি সাংগঠনিক ইউনিটের প্রায় সকল ইউনিটেই সিলেকশনের মাধ্যমে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোন ইউনিট কমিটিই সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয়নি, যে সকল পৌর-থানা-উপজেলার আংশিক পূর্নাঙ্গ কমিটি হয়েছে সেগুলোও সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত নয়। এই সকল আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ অন্তত পাঁচ বছর অতিক্রম করেছে, সকল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫-৭ জন যা বিগত পাঁচ বছরে বর্ধিত করা হয় নাই।
এহন পরিস্থিতিতে আগামী সম্মেলনের ভোটার হবে কারা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিও সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক পদপ্রত্যাশীদের কাছে স্পষ্ট নয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জেলা বিএনপি'র সম্মেলনের আওতাধীন কোন পৌরসভা/থানা/উপজেলা কমিটি গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়নি, সকল কমিটি বর্তমান জেলা বিএনপি'র সভাপতি/সধারণ সম্পাদক মনোনীত পকেট কমিটি। বর্তমান কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আগামী সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। এমত অবস্থায় অন্যান্য কাউন্সিলরদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য কতটুকু অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ পরিবেশ রয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
অবিলম্বে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র মেয়াদ উর্ত্তীণ দীর্ঘ ৭ বছরের বর্তমান কমিটি সহ সকল পৌর-থানা-উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ দীর্ঘ ৫ বছরের কমিটি বিলুপ্ত করে গঠনতন্ত্র মোতাবেক সম্মেলনের ব্যবস্থা করে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ডেলিগেটরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে ১৮টি ইউনিটের ১৮১৮জন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার দাবী জানানো হয়।
এবিষয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রাশেদুল হাসান রঞ্জন বলেন, সারাদেশে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জে ব্যতিক্রম। আমি অতিদ্রুত জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠনের দাবী জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির সাবেক এক সাধারণ সম্পাদক বলেন, হাসিনার অধিনে যেমন সুষ্ট নির্বাচন হয়নি তেমনি বর্তমান জেলা বিএনপির কমিটি রেখে সুষ্ঠ সম্মেলন সম্ভব না। আর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে অনেক নেতাই বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ নেতাদের নিয়ে একটি আহবায়ক কমিটি গঠনের দাবী জানাচ্ছি।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে