সিলেটের ওসমানীনগরের একটি বাড়ি থেকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী একই পরিবারের ৫ জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করার পর বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। মা ও দুই ছেলে-মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) উপজেলার হুলিয়ারবন এলাকায় তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ঝলক পালের বাসা থেকে দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে এসে তারা ওই বাসা ভাড়া নেন বলে জানা গেছে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন- রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার ছেলে মাহিকুল ইসলাম (১৮)। চিকিৎসাধীন আছেন মৃত রফিকুলের স্ত্রী হোসনেআরা বেগম (৪৫), বড় ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) ও মেয়ে সামিয়া ইসলাম (২০)।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) আলমগীর হোসেন দুইজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিলেটের ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরিবারের পাঁচ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে দুইজন মারা যান এবং তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হতাহতরা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী শুনেছি। কিন্তু তার সপক্ষে কোনো তথ্য পাচ্ছি না। তারা ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।
তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কোনো কিছু খাইয়ে অচেতন করা হয়েছিল। এর মধ্যে দুই জন মারা গেছেন। এ ঘটনার নেপথ্যের তথ্য বের করতে সচেষ্ট রয়েছে পুলিশ। এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) ফরিদ উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তিনিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সাংবাদিকদের বলেন, হতাহতরা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিকুল ও তার ছেলে মাহিকুল ইসলাম মারা গেছেন।
ওই ভবনের অপর ফ্লাটের বাসিন্দা ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ১২ জুলাই তারা যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় আসেন। এরপর ১৮ তারিখ সিলেটে এসে ওই ফ্ল্যাটের দোতলার একটি ইউনিটে ভাড়া করে থাকতেন। তারা ছেলের চিকিৎসার সুবিধার্থে বাসাটি ভাড়া নেন তারা। সোমবার রাতে তারা খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিকটাত্মীয় ডাকাডাকি করলেও তাদের কোনো সাড়া শব্দ পায়নি। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত পুরো পরিবার। তাদের দুইজন মারা গেছেন। অন্যদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তবে কীভাবে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হলেন তারা, এটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।