সৈয়দপুর রেলওয়ের ৮০০ একর ভ‚সম্পদ উদ্ধারে গত ১২ই অক্টোবর রেলওয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক সৈয়দপুরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়। উক্ত অভিযানে রেলওয়ের বেহাত হওয়া ২০ একর জমি উদ্ধার করে উদ্ধারকৃত জমিতে লাল পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি কিছু দোকানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও কিছু প্রতিষ্ঠান সীলগালা করা হয়। সীলগালা করা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯এর ১২/২ ও ১২/৩ ধারা এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৩ ধারা অনুযায়ী মামলা নং-এমসি-৭৬/২২ তারিখ ১১/১০/২০২২ ইং ১১.৩০ ঘটিকার সময় শেখ সাদ কমপ্লেক্স এর সমুদয় সম্পদ এবং মূল ফটক সীলগালা করে কেজিও এর কাছে জমা দেওয়া হয়। হেফাজতকৃত ব্যাক্তির ঠিকানা মোঃ সেলিম, পিতা মোঃ নুর উদ্দিন, বাঙ্গালীপুর এবং উক্ত পত্রে সাক্ষী দিয়েছেন মোঃ হুমায়ুন, বাঙ্গালীপুর।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ সাদ কমপ্লেক্সের মালিক শেখ আলীম মিন্টু অদ্য ১৯শে অক্টোবর ২০২২ইং তারিখে তার সীলগালাকৃত প্রতিষ্ঠান শেখ সাদ কমপ্লেক্সের ভিতরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তার স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার আইনজীবি। তিনি বলেন রেলওয়ে অযৌক্তিক অভিযানের নামে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আর্ন্তজাতিক মানের ২০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের বাস্তবায়ন নস্যাতে কুচক্রী মহরের ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। ২০১৭ সালে আমি এই জমি ক্রয় করে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বিশবছর যাবত ভোগদখলে আছি। সরকারী বিধান মতে সকল খাজনা খারিজ আমার নামে রহিয়াছে। রেল কর্তৃপক্ষ উক্ত জমির মালিকানা দাবী করে ৯/১৮ একটি মামলা চলমান রহিয়াছে। আদালত থেকে উক্ত জমিতে নির্মান কাজ না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা রহিয়াছে।
গত ১২ ই অক্টোবর কোন প্রকার নোটিশ না দিয়েই রেল কর্তৃপক্ষ আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শেখ সাদ কমপ্লেক্স দখলে নেওয়ার অভিযান চালায়। উক্ত অভিযানে নের্তৃত্বে ছিলেন রেলের পশ্চিমাঞ্চলের ভ‚সম্পত্তি কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুজ্জামান, ফিল্ড কানুনগো জিয়াউল হক জিয়া, সৈয়দপুর উপজেলার সহকারী ভ‚মি কমিশনার মোঃ আমিনুল ইসলামসহ প্রশাসনিক সকল কর্মকর্তা। তারা আমার প্রতিষ্ঠানে ঢুকে আমার ম্যানেজারকে গোপনে ডেকে নিয়ে অভিযান থেকে বাঁচানোর প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবী করেন। এতে আমার ম্যানেজার রাজী না হলে তারা গেটে তালা লাগিয়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করেন। তারই ধরাবাহিতায় রেলের এই হটকারী সিদ্ধান্ত এবং কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অদ্যকার সংবাদ সম্মেলন আযোজন করা হয় বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্যে জানা যায় যে আলীম মিন্টুর নামীয় কেনা সম্পত্তি মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে, ভারত স¤্রাটের অধীনে ইষ্ট বেঙ্গল রেলওয়ের নামে সিএস, এসএ এবং বর্তমান বাংলাদেশ রেলওয়ের নামে বিএস খতিয়ান রহিয়াছে, উক্ত বিত্তে রেলের লীজ লাইসেন্স সূত্রে চিরস্থায়ী মালিকানা দাবী করে জনৈক আমানুল্লা মন্ডলের ওয়ারিশ মনির মন্ডল তাহার স্ত্রী ও পুত্রগণ বাদী হইয়া সাবজজ নীলফামারী আদালতে ২/৯৩ নং মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি ৬৫/৯৪ মামলা হয়। উক্ত মামলায় রেল জবাব দাখিল করে রেলের পক্ষে রায় হয়ে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। এই রায়ের বিরুদ্ধে মনিরউদ্দিন মন্ডলের ওয়ারিশগন পুনরায় অন্য আপিল ১৭৬/২০১১ মামলা দায়ের করেন যা গত ২২/০৩/২০১৮ তারিখে শুনানী অন্তে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় তফসীলকৃত বিত্ত মনিরউদ্দিন মন্ডল ও তার ওয়ারিশগণ মামলায় পরাজিত হয় এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে জয়লাভ করেন। এই অবস্থায় শেখ আলীম মিন্টু উক্ত তফসীল বর্ণিত রেল ভ‚মিতে বহুতল ভবন নির্মানের পাঁয়তারা করিতেছে। উক্ত জমি বাংলাদেশ রেলওয়ের এবং শেখ আলীম মিন্টু উক্ত জমি মনিরউদ্দিন মন্ডলের ওয়ারিশগণের কাছ থেকে কিনেছেন বলে তারা জানান। শেখ আলীম মিন্টুর চাঁদাবাজীর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, তিনি সরকারী উচ্ছেদ কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এইসকল অভিযোগ আনিয়াছেন বলেও তারা জানান। আমরা সরকারী নিয়ম মেনেই অভিযান পরিচালনা করেছি, রেল কর্তৃপক্ষ আরো বলেন উক্ত আবাদী জমি রেলের কাছ থেকে ৫০ শতক জমি লীজ নিয়েছেন আব্দুল খালেক সাবু, পিতা-মৃত জমিরউদ্দিন, নতুন বাবুপাড়া, সৈয়দপুর। শাহজাদী বেগম, স্বামী-মোস্তাফিজার রহমান, বেলাইচন্ডী, পার্বতীপুর, লীজের পরিমান ৩০ শতক। আরমান আহমেদ, পিতা-মুরাদ আলী মাষ্টার, ব্রক্ষোত্তর, কামারপুকুর, সৈয়দপুর। লীজের পরিমান-১৫ শতক। এমএ রহিম প্রামানিক, পিতা-আব্দুল মজিদ প্রামানিক, পার্বতীপুর, দিনাজপুর, লীজের পরিমান-৫০ শতক। পপি আকতার, পিতা-মোজাম্মেল হক, বাঙ্গালীপুর,সৈয়দপুর, লীজের পরিমান=৩ শতক। মোকতাদির সানি, পিতা-আকম সাইদুর রহমান,ইন্দিরা রোড, খামারবাড়ি, ঢাকা, লীজের পরিমান-৫০ শতক। আতিকুল আলম, পিতা=আব্দুল কুদ্দুস, পুরাতন বাবুপাড়া, সৈয়দুপর, লীজের পরিমান-৫০শতক। শরিফুল ইসলাম, পিতা-শামসুল হক, পার্বতীপুর, দিনাজপুর, লীজের পরিমান-১০ শতক।