ঢাকা, রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ই পৌষ ১৪৩১

হাকালুকি হাওরে বৃক্ষ নিধন থামছে না

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : সোমবার ৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:০৩:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন হাকালুকি হাওরের সরকারি খাসজমি থেকে হিজল-করচসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ বৃক্ষ নিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাওরের মালাম বিলের দক্ষিণ পাশের ও সাতবিলার উত্তর পাশের প্রায় ৫ একর জমি থেকে এই গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কেটে ওই এলাকায় ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করে বোরো ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। আবার কোথাও বোরো ধান চাষের জন্য ট্রাক্টর দিয়ে জমি তৈরি করার কাজ চলছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মালাম বিলের দক্ষিণ পাশের ও সাতবিলার উত্তর পাশের জমি থেকে প্রায় ৬০০ গাছ কাটা হয়েছে। এর আগে প্রায় ৭ মাস আগে হাকালুকি হাওরের মালাম বিলের দক্ষিণ-পূর্ব পাশের খাসজমি থেকেও কয়েক হাজার গাছ কাটার অভিযোগ ওঠে।

বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় ১ ডিসেম্বর বড়লেখা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন হাল্লা ফরেস্ট ক্যাম্পের কর্মকর্তা জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট তপন চন্দ্র দেব নাথ। এতে ৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন-বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের কাজিরবন্দ গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে পারভেজ আহমদ, মৃত মইয়ব আলীর ছেলে রিয়াজ আলী, মৃত ছোয়াব আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন, মৃত ছাদ উল্লার ছেলে গফুর উদ্দিন, মৃত দেলইর ছেলে হান্নান, ছত্তার আলীর ছেলে জয়নাল, ছালিয়া গ্রামের মৃত তছির আলীর ছেলে মালেক ও মৃত মইয়ব আলীর ছেলে সুরুজ আলী এবং কাজিরবন্দ গ্রামের মৃত আমরুজ আলীর ছেলে মোশাইদ আলী। 

 

হাল্লা ফরেস্ট ক্যাম্পের কর্মকর্তা জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট তপন চন্দ্র দেব নাথ বলেন, ‘চলিত বছরের মে মাসে কয়েক হাজার জলজ বৃক্ষ ধ্বংস করে ট্রাক্টর দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। সেই জায়গার অন্য পাশের প্রায় ৫ একর ভূমিতে এবার চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার গাছ উপড়িয়ে বোরো ধান লাগানো হয়েছে। আগের ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েকজন এবারও গাছ কাটায় জড়িত আছেন।’

 

বড়লেখা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। খাসজমির বনের ভেতরে জমি তৈরি করে বোরো ধানের চারা লাগানোর আলামত পাওয়া গেছে। এই বিষয়য়ে তদন্ত পূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা যেহেতু পরিবেশ অধিদপ্তরের আওত্তাধীন তারা নিয়মিত মামলা করবেন। এর আগেও গাছ কাটার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছিল।’

 

পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত শনিবার সরেজমিন পরিদর্শন (হাওরের যেখানে গাছ কাটা হয়েছে) করেছি। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে এখানে প্রায় ৬০০ গাছ কাটা হয়েছে। ওই জায়গায় লাল ফ্ল্যাগ টানিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে আর কেউ এই এলাকায় ঢুকতে না পারে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’ পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা বলেন, ‘গাছ কাটার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’