ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১

১৬ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকার জ্বালানি তেল কিনবে সরকার

অর্থনীতি ডেস্ক | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:১৯:০০ পূর্বাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

সরকার প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি তেল আমদানি করবে। এর মধ্যে ৬ হাজার ২৫ কোটি টাকার অপরিশোধিত এবং ১০ হাজার ৭১০ কোটি টাকার পরিশোধিত তেল কেনার জন্য প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। পাশাপাশি ভোজ্যতেল, ডাল ও সার আমদানির আরও কয়েকটি প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সৌদি অ্যারাবিয়ান অয়েল কোম্পানি থেকে ২০২৫ সালের জন্য সাত লাখ টন অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড (এএলসি) গ্রেডের অপরিশোধিত তেল আমদানির জন্য ৬ হাজার ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

অন্যদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে সিঙ্গাপুরের ইউনিপেক সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, এবং দুবাইয়ের ওকিউ ট্রেডিং থেকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনা হবে। এ বাবদ ব্যয় হবে ১০ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। যদিও পরিশোধিত তেলের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি।

সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রির জন্য টিসিবির মাধ্যমে ৩৮ লাখ ১০ হাজার লিটার সয়াবিন এবং ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পাম অয়েল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ১৯৬ কোটি টাকা। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এস আলম সুপার এডিবল অয়েলের কাছ থেকে এই তেল কেনা হবে। সয়াবিনের দাম লিটারপ্রতি ১৪০ টাকা এবং পাম অয়েলের দাম লিটারপ্রতি ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে রাজশাহীর নাবিল নবা ফুডস থেকে প্রতি কেজি ৯৫ টাকা ৯৭ পয়সা দরে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

সরকার সৌদি আরব, রাশিয়া ও মরক্কো থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৩০ হাজার টন, এমওপি সার ৩০ হাজার টন, ডিএপি সার ৪০ হাজার টন এবং টিএসপি সার ৩০ হাজার টন রয়েছে। এসব সার কিনতে মোট ব্যয় হবে ৬৬০ কোটি টাকা।

ভিটল এশিয়া থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এ জন্য ৭০৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এলএনজি সরবরাহের সময়সীমা আগামী বছরের ৪-৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, জরুরি পণ্য দ্রুত আমদানির জন্য ঘন ঘন ক্রয় কমিটির বৈঠক হচ্ছে। তিনি বলেন, "এটা প্রমাণ করে, এই সরকার মানুষের সুবিধার দিকে নজর রাখছে।"

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, "সরকারের পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়েছে। সব পণ্যের দাম একসঙ্গে কমানো সম্ভব নয়। তবে কিছু পণ্যের দাম কমেছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে।"

এই সিদ্ধান্তগুলো দেশের জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তেলের পাশাপাশি ভোজ্যতেল, ডাল এবং সার কেনার মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে সরকার।

 

বায়ান্ন/এএস