নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে দীর্ঘ ০৭ বছর পলাতক থাকার পর পিরোজপুর হতে গ্রেফতার করছে র্যাব-০২।
র্যাব ০২ এর প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়,আসামী মোঃ জিয়াউল ইসলাম(৪৫) এবং ভিকটিম স্বামী-স্ত্রী ছিলেন। আসামী মোঃ জিয়াউল ইসলাম তার স্ত্রী’কে যৌতুকের জন্য প্রায়ই নির্যাতন করতো। ঘটনার দিন রাতের বেলা ভিকটিম এর স্বামী মোঃ জিয়াউল ইসলাম (৪৫) এর মধ্যে যৌতুক নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। রাতের কথা কাটাকাটির জেরে আসামী একই তারিখ ভোরবেলা তেল গরম করে তার ঘুমন্ত স্ত্রীর শরীরে ঢেলে দেয়। এতে ভিকটিম শরীরের অনেকাংশ ঝলসে যায়। ভিকটিম দ্রুত ওয়াশরুমে গিয়ে শরীরে পানি ঢালতে গেলে আসামী একটি কাঁচের প্লেট দিয়ে পিছন থেকে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করে। এতে কাঁচের প্লেট ভেঙ্গে গিয়ে কাঁচের টুকরো ভিকটিমের মাথায় ঢুকে যায় এবং মাথা ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে। তখন ভিকটিমের চিৎকার শুনে তাদের বাড়িওয়ালা দ্রুত সেখানে পৌঁছায় এবং ভিকটিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে আসামী মোঃ জিয়াউল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ডিএমপি, ঢাকা, খিলক্ষেত থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধিত-২০০৩) এর ১১(খ) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের এর পর আসামী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। উক্ত মামলায় আসামী মোঃ জিয়াউল ইসলাম ০৯(নয়) মাস জেল হাজতে থাকার পর জামিনে বের হয়ে নিয়মিত হাজিরা না দিয়ে পলাতক হয়। অন্য দিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষে বিজ্ঞ আদালত আসামী মোঃ জিয়াউল ইসলাম এর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮, ঢাকা আসামীকে উক্ত মামলায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদানপূর্বক গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন। গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে আসামী দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে রয়েছে মর্মে তথ্যের ভিত্তিতে পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-২ এবং র্যাব-৮এর আভিযানিক দল গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।