ঈদে মিলাদুন্নবী এবং সাপ্তাহিক মিলিয়ে টানা কয়েক দিনের ছুটিতে সৈকত শহর কক্সবাজারে পর্যটকের জনস্রোত নেমেছে। আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে সাগর তীরে মেতেছেন তারা। আর তাদের নিরাপত্তায় কাজ করছে টুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসকের বিচ কর্মীরা।
শুধু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নয়, পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, পাথুরে সৈকত ইনানী, হিমছড়ি ও রামু বৌদ্ধ মন্দির, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরেও।
ঢাকা থেকে এসেছেন ফরহাদ কুশবা দম্পতি। তারা বলেন, টানা কয়েক দিনের ছুটিতে কক্সবাজার ছুটে এসেছি। আসার সময় বাসের টিকিট সংকট দেখা দিয়েছিল। তবে কোনো রকমে পেছনের দুটি সিট ম্যানেজ করেছিল। আসার পথে কষ্ট হলেও সমুদ্র দেখে সব কষ্ট ভুলে গেছি।
গাইবান্ধা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন জাহিদুর রহমান। তার পরিকল্পনা ছিল পরিবার নিয়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন যাবেন। তবে এবার কক্সবাজার থেকে শুধু একটা জাহাজ ছিল। জাহাজের টিকিট না পেয়ে সেন্ট মার্টিন যেতে না পেরে মন খারাপ তার।
জানা গেছে, টানা কয়েক দিনের ছুটিতে পর্যটকদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউস মালিকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বেশির ভাগ হোটেল ও গেস্টহাউস বুকিং হয়েছিল। লাখের অধিক পর্যটক বর্তমানে অবস্থান করছে। এই ছুটিতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ব্যবসা হওয়ার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা ।
হোটেল সী গাজীপুরের মহা-ব্যবস্থাপক আব্দুল জাব্বার বলেন, পর্যটক মেলায় আমাদের প্রায় রুম বুকিং হয়েছে। আমাদের ১০ তারিখ পর্যন্ত বুকিং আছে। অনেক পর্যটক রুম চাইলেও দিতে পারছি না।
কলাতলীর রেন ভিউ মালিক মুকিম খান জানান, হোটেল-মোটেলে যে পরিমাণ ধারণক্ষমতা তার চেয়েও লোকসমাগম বেশি হয়েছে। রুম বুকিং করে যারা এসেছেন, তারা ছাড়া বাকিরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এখানে লাখেরও বেশি মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বেশি পর্যটক এলে রাত্রিযাপন নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি পয়েন্টে আমাদের তথ্য কেন্দ্র রয়েছে। পর্যটকরা যদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক রয়েছে। পাশাপাশি সমুদ্র গোসল করতে নামা পর্যটকদের জন্য আমাদের বিচ কর্মী ও সী লাইফ গার্ড কর্মীরা কাজ করছে। পর্যটকদের হয়রানি রোধে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করছে।
অন্যদিকে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা, তথ্যসেবা, পানীয় জলের ব্যবস্থাসহ নানা সেবামূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ। কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে আলাদা ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। আপত্তিকর ঘটনা এড়াতে তারা সবসময় সজাগ রয়েছে।