গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বৃদ্ধ বাবাকে শ্বাসরোধ করে হত্যায় পুত্র সহ ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই সংক্রান্তে মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ সুপার এ,এম আর এম আলিফ জানান- গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার বৈষ্ণব দাশ গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলী বাদশার পুত্র জাহিদুল ইসলাম গং এর সাথে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের মৃত জলিল এর পুত্র রফিকুল ইসলাম এর জমিজমা সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা শত্রুতা পোষণ পূর্বক কোন রকমের হুমকি দিয়ে আসছিল। ২০১৮ সালের ৪মে সকালে হত্যাকান্ডের শিকার সেকেন্দার আলী বাদশা ১নং আসামি জাহিদুল ইসলাম এর বাসার পাশে ধান দেখার জন্য যায়। তখন বাদী জাহিদুল এর প্রতিবেশী মামা জামাত আলী একটু এগিয়ে দেখে বাদীর পিতা ভিকটিম সেকেন্দার আলী বাদশা উক্ত বাশ বাঁশঝাড়ের ভিতরে মাটির উপরে পড়ে গ্যাংরাচ্ছে। তখন জামাত আলী মন্ডল বাদীর বাড়ীর লোকজনকে সংবাদ দিলে বাদীর বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে এসে সেকেন্দার আলী বাদশাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রংপুর নেয়ার প্রস্তুতিকালে মারা যায়। এতে করে বাদী জাহিদুল ইসলাম সাদুল্যাপুর থানায় মামলা দায়ের করে। যা ২০১৮ সালের ২০ জুন পেনাল কোড ৩০২/৩৪ ধারায় ১৬০/২০১৮ জিআর নং অনুযায়ী ২৫ নাম্বার মামলা রেকর্ড হয়। পরে ৯জুন ২২ ইং তারিকে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ( পিবিআই) মামলাটির দায়িত্বভার নিলে পিবিআই পুলিশ সুপার এ,এম আর এম আলিফ এর নির্দেশে এস,আই নিরস্ত্র শাহ আলম তদারকি শুরু করলে হত্যার রহস্য উদঘাটনের মাধ্যমে জানা যায়- হত্যাকান্ডের শিকার সেকেন্দার আলীর পুত্রর প্রতিবেশী মামা জামাত আলী, সেকেন্দার আলীর পুত্র জাহিদুল ইসলাম জাহেদুল, বৈষ্ণব দাশ গ্রামের মৃত পরপ উদ্দিন এর পুত্র আব্দুল মোন্নাফ ও আব্দুল আজিজ ২০১৮ সালের ৩রা মে সেকেন্দার আলী বাদশাকে হত্যার জন্য পরস্পর পরিকল্পনা করে। সেদিন রাতে সেকেন্দার আলী বাদশা বাড়ীর পাশে পুকুর পাড়ে একা বসে থাকায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা সেখানে গেলে মোন্নাফ গেঞ্জি দিয়ে গলায় পেচিয়ে মুখ চেপে ধরে ও আজিজ সেকেন্দার আলীকে জড়িয়ে ধরে তখন অন্য আসামি জামাত আলী ও জাহেদুল ইসলাম সহযোগীতায় পাজাকোলে তুলে পুকুর পাড় হতে ইউনুছ আলীর বাঁশঝাড়ে নিয়ে যেয়ে নাক মুখ চেপে ধরায় সেকেন্দার আলী হাত পা নড়াচড়া বন্ধ করলে তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে বাশ ঝাড়ের ভিতর একটি নালায় তাকে ফেলে চলে যায়। পরের দিন ৪মে বিকেলে জামাত আলী তাকে দেখতে যেয়ে গোংরানো ও জীবিত অবস্থায় দেখতে পায়। এসময় সেখানে১৮বছর বয়সী লিমন মিয়া নামে এক ছেলে বাদশাকে টানা হেচড়া করতে দেখে ফেলায় জামাত আলী ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। পরে জামাত আলী সহ এলাকার লোকজন বাদশাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। ফলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ( পিবিআই) সদস্য মাওলানা জামাত আলী মন্ডল, জাহিদুল ইসলাম জাহেদুল, আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মোন্নাফকে গ্রেফতার করে।