ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রেমের টানে চৌদ্দগ্রাম থেকে রায়পুরে এসে ধর্ষণের শিকার!হত্যার পর ধর্ষণের শিকার লাশও

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ, করেসপন্ডেন্ট : | প্রকাশের সময় : রবিবার ২১ অগাস্ট ২০২২ ০১:৪৯:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পরকীয়া প্রেমিকের টানে রায়পুর এসে হত্যাকান্ডের শিকার নারীর পরিচয় ও ঘাতক প্রেমিক ও সহযোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম লায়লা নুর নিপু (২৫)। বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর গ্রামের আবুল কাশেম মজুমদারের মেয়ে। সে ওই এলাকার আরিফুর রহমান নামে এক দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী। 

এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর সোহাগের সহযোগী রফিক মৃত লায়লাকে আবার ধর্ষণ করে বলে সোহাগ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। 

গ্রেফতারকৃত আসামী মো: সোহাগ হোসেন (২৭) হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে শনিবার লক্ষ্মীপুরের

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল হোসেনের নিকট স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

আসামী সোহাগ হোসেনের বর্ণনা মতে প্রেমের টানে আসামী সোহাগের সাথে ভিকটিম লায়লা বাড়ি থেকে বের হয়। আসামী সোহাগের বন্ধু রফিকের প্রলোভনে আসামী সোহাগ লায়লাকে রফিকের মামার বাড়ি রায়পুর নিয়ে আসে। রফিকের মামার বাড়িতে আসামী সোহাগ ভিকটিম লায়লাকে ধর্ষণ করলে রফিকের মামী তাদেরকে ঘর বের করে দেয়। 

মামীর বাড়ি থেকে ফেরত আসার সময় রফিক সুপারি বাগানের ভিতর দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসার পথিমধ্যে সোহাগ ও রফিক মিলে ভিকটিম লায়লাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডের পর সোহাগের সহযোগী রফিক মৃত পড়ে থাকা লাশ লায়লাকে ধর্ষণ করে। আসামী সোহাগ হোসেনের বর্ণনা মতে ১৬ আগস্ট রাত ০৮ টায় তাকে হত্যা ও ধর্ষণ করে। আসামী রফিক বর্তমানে পলাতক রয়েছে। 

রায়পুুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন ঘাতকরা তাকে জীবিত থাকতে এবং হত্যার পরে লাশকে ফের ধর্ষণ করে এটি জগণ্যতম একটি ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চৌকস টিম অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং জেলা পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ওনাদের সর্বোচ্চ দিক নির্দেশনায় আসামীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। তিনি আরো জানান, গত ১৬ আগস্ট সে বাবার বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় লায়লা। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেবীপুর চর পলোয়ান গ্রামের একটি খালপাড়ে থাকা সুপারী বাগান থেকে তার অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মৃত নিপুর বাবা আবুল কাশেম বাদি হয়ে রায়পুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামী করা হয়েছে। 

সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী, রায়পুর সার্কেল এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে রায়পুর থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় শনাক্তপূর্বক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এবং উক্ত ঘটনার মূল হোতা মোঃ সোহাগ হোসেন (২৭)কে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইলসহ চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে। 

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টার দিকে রায়পুর উপজেলার একটি সুপারী বাগানে এক অজ্ঞাত নারী মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে। তার গলায় ওড়না পেঁচানো ছিলো এবং পাশে একটি ব্লেড পাওয়া যায়৷

আবুল কাশেম জানান, প্রায় ৫/৬ বছর আগে তার মেয়ে নিপুর বিয়ে হয়। তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। তাদের কোন সন্তান নেই৷ নিপু বাবার বাড়ি এবং শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতো। গত ১৬ আগস্ট সকাল ১০ টার দিকে তার মেয়ে চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর বাজারের একটি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ থাকে। পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্নস্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পায়নি।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তারা রায়পুর থানায় এসে মৃতদেহটি নিপুর বলে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় তিনি নিজেই বাদি হয়ে রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।স্থানীয়দের ধারণা ছিলো, ওই নারীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।