মাদারীপুরের রাজৈরে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক ছাত্রীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে হত্যাচেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের তার দুই সহপাঠী বিরুদ্ধে। রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় সোমবার (২০ নভেম্বর) সকালে রাজৈর থানায় মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা। এই ঘটনায় অভিযান পরিচালনা করে নিজবাড়ি থেকে প্রধান অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার দিগন্ত রায় (১৫) রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের বড়খোলা গ্রামের কিংকর রায়ের ছেলে ও জয় বিশ্বাস (১৫) একই গ্রামের প্রহলাদ বিশ্বাসের ছেলে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বেশকিছুদিন ধরে রাজৈরের আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বড়খোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে আলাদাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল একই শ্রেণির দিগন্ত রায় ও জয় বিশ্বাস প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দিগন্ত ও জয়। রোববার সকালে ছোট ভাইয়ের সাথে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসছিল ওই শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের কাছে আসলে ইজিবাইকে আসা দিগন্ত ও জয়ের সহযোগীরা শিক্ষর্থীকে মারধর করে। একপর্যায়ে সাথে থাকা পেট্টোল মেয়েটির শরীরে ঢেলে দেয়। এ সময় এলাকা ত্যাগের হুমকিও দেয়া হয়। পরে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বখাটেরা। ভাইবোনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে ১৫ বছরের মেয়েটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হয়। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে মামলা দায়ের করলে দুইজনকে নিজবাড়ি থেকে সোমবার সকালে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে পাঠানো হয়েছে আদালতে। অভিযুক্তদের দুজন আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বড়খোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের একই শ্রেণির ছাত্র।
স্বজনরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে আলাদাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল একই শ্রেণির দুই সহপাঠী। তবে এতে সাড়া দিচ্ছিল না কিশোরী। রোববার সকালে ভাইয়ের সঙ্গে হেঁটে সে বিদ্যালয়ে আসছিল। বিদ্যালয়ের কাছে যাওয়ামাত্র ওই দুই সহপাঠী ও তাদের সহযোগীরা তাদের মারধর করেন। একপর্যায়ে সঙ্গে থাকা পেট্রোল ঢেলে হত্যাচেষ্টা চালান। এসময় ভাইবোনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বদখোলা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক স্বপন ঠাকুর বলেন, বিষয়টিকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। অল্পের জন্য মেয়েটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচেছে। আমরা সবাই এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ৫ জনের নামে দায়ের করা হয়েছে। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সাথে যে কাজটি করা হয়েছে সেটি খুবই জঘন্য অন্যায়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড হয়েছে। এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত দুইজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে চলছে অভিযান।
