দেশে তেল নেই।তেলের বড় সংকট, যা আছে তাও চড়া দাম।সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে এই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। কয়েকদিন আগেও সারা দেশের মতো চট্টগ্রামে পাওয়া যাচ্ছিল না সয়াবিন তেল।এখন মিলছে একের পর মজুদ বা তেলের খনি।তবে লিটারে ৩৮ টাকা দাম বাড়ানোর পরই দোকানগুলোতে মিলছে এই নিত্যপণ্য। অভিযানে ব্যবসায়ীদের গোডাউনেও পাওয়া যাচ্ছে মজুত করা তেল। যা দাম বাড়ানোর আগেই মজুত করা হয়েছিল।
গত তিন দিনে পৃথক অভিযানে চট্টগ্রাম শহরের তিন ব্যবসায়ীর গোপন গুদাম ও বাড়ি থেকে ১৮ হাজার ৩৭৮ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছে। মজুদ করে বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট সৃষ্টির অভিযোগে তাদেরকে জরিমানাও করা হয়েছে। জব্দ করা তেল পরে খুচরা ব্যবসায়ীসহ সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে এসব তেল জব্দ করেন। এমন অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। তবে তেলের বাজার স্থিতিশীল করতে অভিযান বাড়ানোর পাশাপাশি বড় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
গত সোমবার (৯ মে) নগরের পাহাড়তলী বাজারের সিরাজ স্টোর নামে দোকানের তিনটি গুদামে অভিযান চালানো হয়। তিন গুদাম থেকে এক হাজার কার্টনে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। তেল মজুতের অভিযোগে এ প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ করা তেল খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। রবিবার চৌমুহনী এলাকার সিডিএ কর্ণফুলী মার্কেটে অভিযান মেসার্স খাজা স্টোরের গুদামে বিশেষ কায়দায় আন্ডারগ্রাউন্ডে লুকিয়ে রাখা এক হাজার ৫০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওই তেলও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। শনিবার রাতে ফটিকছড়ি উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর ঘর থেকে জব্দ করা হয় দুই হাজার ৩২৮ লিটার সয়াবিন তেল। তেল মজুতের অভিযোগে ব্যবসায়ী আকতার হোসেনকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ফটিকছড়ি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলমগীর।
এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রামের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর মাত্র দুই দিন অভিযান চালিয়েছে। যেখানে অভিযান চালিয়েছে সেখানে তেলের মজুত পাচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ী থেকে পাইকার কিংবা ডিলার অথবা মিলে যেখানে অভিযান চালাবে সেখানে মজুত করা তেল পাওয়া যাবে। এটি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সে অনুযায়ী অভিযানের সংখ্যা খুবই কম। ভোক্তা অধিকারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশের জোরালো অভিযান প্রয়োজন। এখন ছোট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। বড় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান হলে আর বেশি মজুত করা তেল পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘মূলত কী কারণে বাজারে তেলের সংকট তা জানার জন্য এ অভিযান। তবে কিছু স্থানে তেলের সরবরাহে ঘাটতি আছে। একইসঙ্গে অনেকে মজুতও করেছেন। মূলত নানা কারণে তেলের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।’এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।