ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ইটভাটায় সন্তানের সামনেই স্ত্রী নয়ন তারাকে কুপিয়ে হত্যা করলেন তার পাষণ্ড স্বামী। ঘটনার সময় নিহতের কন্যার শোরচিৎকারে ইটভাটার অন্য শ্রমিকরা এগিয়ে এসে ঘাতক চাঁন মোস্তফাকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। পুলিশ নিহতের মরদেহ পাঠিয়েছে মর্গে।
শনিবার (১৩ মে) ভোরে জেলার সরাইল উপজেলার ধরন্তি এলাকায় দি নিউ আশা ব্রিকস ফিল্ডে ঘটে বর্বরোচিত এই ঘটনা। নিহত নয়ন তারা (৩৫) কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার টেঙ্গুরিয়া গ্রামের মৃত কালা মিয়ার মেয়ে। অপরদিকে তার ঘাতক স্বামী চাঁন মোস্তফা একই এলাকার বাসিন্দা।
নিহতের কন্যা, ইটভাটার অপরাপর শ্রমিক এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরাইল উপজেলার ধরন্তি এলাকার দি নিউ আশা ব্রিকস ফিল্ডে শ্রমিকের কাজ করতেন কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা এলাকার ভাটা শ্রমিক চাঁন মোস্তফা। সেখানে অন্যান্য শ্রমিকদের মতো তিনিও ছাউনি ঘরে স্ত্রী নয়ন তারা এবং ১০ বছর বয়েসী একমাত্র কন্যা তাজিনকে নিয়ে বসবাস করেন। শনিবার ভোররাতে পারিবারিক কলহ নিয়ে চাঁন মোস্তফা এবং তার স্ত্রী নয়ন তারার মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়। তাদের প্রচণ্ড বাকবিতণ্ডার শব্দে ঘুম থেকে জেগে যায় তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান তাজিন। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সন্তানের সামনেই চাঁন মোস্তফা দা দিয়ে তার স্ত্রীকে কোপাতে থাকে। এই অবস্থায় কন্যা তাজিন ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে শোরচিৎকার করে পাশের ঘরগুলোয় বসবাসরত অন্যান্য শ্রমিকদের জাগিয়ে তুলে ঘটনাটি জানালে, তারা গিয়ে দেখেন নয়নতারার রক্তাক্ত নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। পরে তারা ঘাতক চাঁন মোস্তফাকে আটক করে পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এতিকে ইটভাটার শ্রমিকদের হাতে আটক স্ত্রীঘাতক চাঁন মোস্তফাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
সরাইল থানার পরিদর্শক (ওসি) আসলাম হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, 'পারিবারিক কলহ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে ভাটা শ্রমিক চাঁন মোস্তফা তার মেয়ের সামনেই এই নারকীয় কাণ্ড ঘটায়। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।' (ছবি : মেইলে সংযুক্ত)