সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম দিনমজুর নুর আলী সর্দার। বাড়ি তার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পান্তাপড়া গ্রামে। দরিদ্র এ মানুষটি হাড়ভাঙা খাটনি করে সংসার চালিয়ে এসেছেন দিনের পর দিন। কিন্তু গত প্রায় দেড় বছর আগে তার তিনি পাইলস এ আক্রান্ত হন। সে সময়ে টাকার অভাবে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারেননি। ধীরে ধীরে ক্ষতস্থানে ক্যান্সারে রূপ নেয়। দরিদ্র পরিবার হলেও তাদের সম্পদ বলে যা কিছু ছিল তা সবকিছু শেষ করেছেন। এখন সম্বল বলতে বসতভিটার মাত্র ৭ শতক জমি।
নুর আলী সর্দার জানান, তার ৩ মেয়ে। এসএসসি পাসের পর বড় মেয়ে ছন্দা খাতুনের বিয়ে হয়ে যায়। মেজ মেয়ে অন্তরা ইয়াসমিন বর্তমানে যশোর সরকারি মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্সের শিক্ষার্থী। আর ছোট মেয়ে অনামিকা ইয়াসমিন যশোর এম এম কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। স্বপ্ন ছিল অনেক। মেয়ে দুজন পড়াশুনায় ভালো। এখন না খেয়েই সংসার চলে সেখানে পড়ানো তো দূরের কথা । সর্বশেষ এই অপারেশন করাতে পারলে আবার পরিশ্রম করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। নাহলে দুই মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
নুর আলী সর্দারের স্ত্রী মিনা বেগম জানান, বসতভিটার মাত্র ৭ শতক ছাড়া মাঠে কোনো চাষযোগ্য জমি নেই তাদের। তার স্বামী কঠোর পরিশ্রম করে মেয়েদের লেখাপড়াসহ সংসারের যাবতীয় খরচ মেটাতেন। এতে কষ্ট হলেও চলে যেত সংসার। দরিদ্র পরিবার হলেও তাদের সম্পদ বলে যা কিছু ছিল তা সবকিছু শেষ করেছেন। পরে নিরুপায় হয়ে গ্রামবাসীর কাছে হাত পেতে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু এখনও তার পায়ুপথ বাদে বিশেষ পাইপের মাধ্যমে মলত্যাগ করানো হচ্ছে। চিকিৎসক বলেছেন, আরও একটি অপারেশন করাতে পারলে এখন পায়ুপথ দিয়েই সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা। যে টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্তরা ইয়াসমিন জানান, এ পর্যন্ত তার চিকিৎসায় সংসারে যা ছিল তার সবই শেষ। গ্রাম ও এলাকার মানুষের আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছেন। রোজগারের লোকজন না থাকায় একদিকে এখন তাদের না খেয়েই থাকতে হচ্ছে।
গ্রামের বাসিন্দা ও কোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আরিফ হোসেন জানান, মাঠে জমি না থাকলেও দিনমজুর হয়েও ৩ মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছে। তিনি বলেন, চিকিৎসায় তারাও কয়েক দফায় আর্থিক সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন। আরও একটি বড় অপারেশন প্রয়োজন। এ জন্য এ পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন তিনি।
সাহায্য পাঠাতে- ০১৭৫৩-০৭৩২৮৫ (বিকাশ ও নগদ)। অ্যাকাউন্ট নম্বর- ৪২১৪২৬১৩৭৮৩০০, অন্তরা ইয়াসমিন, এবি ব্যাংক লিমিটেড, যশোর শাখা।