মুন্সিগঞ্জের চরমুক্তারপুরে আবাসিক ভবনে গ্যাস লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে একে একে একটি পরিবারের সবাই মারা গেলেন। প্রথমে মারা যায় ওই পরিবারের দুই শিশু। এরপর তাদের বাবা মারা যান। সর্বশেষ ওই দুই শিশুর মা মোছা. শান্তা বেগমও (২৩) মারা গেছেন।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাত আড়াইটার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু। তাকে ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শান্তা বেগমের শরীরের ৪৮ ভাগের বেশি দগ্ধ ছিল। তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। বুধবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।’
ডা. আইউব বলেন, ‘গত ২ ডিসেম্বর দগ্ধ একই পরিবারের চারজনকে শেখ হাসিনা বার্নে আনা হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৭টার দিকে শিশু ইয়াছিনের (৫) মৃত্যু হয়। তার শরীরের ৪৪ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এর পৌনে দুই ঘণ্টা পরই তার বোন নোহর (৩) মারা যায়। তার শরীরের ৩২ শতাংশ দগ্ধ ছিল।’
তিনি বলেন, ‘দুই শিশু সন্তান মারা গেলেও তাদের বাবা কাওছার (৩৬) ও মা শান্তা বেঁচে ছিলেন। কাওছারের শরীরের ৫৪ শতাংশ এবং শান্তার ৪৮ শতাংশ দগ্ধ ছিল। তাদেরকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। তবে গত ৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কাউছার মারা যান। এরপর বেঁচে ছিলেন একমাত্র শান্তা। তিনিও গতকাল দিনগত রাতে মারা গেছেন।’
জানা গেছে, গত ২ ডিসেম্বর ভোর ৪টার দিকে চরমুক্তারপুর এলাকার স্থানীয় জয়নাল আবেদিনের চারতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটে। এতে অগ্নিদগ্ধ হন বাড়ির ভাড়াটিয়া কাওছার, তার স্ত্রী শান্তা বেগম এবং তাদের দুই শিশু ইয়াছিন ও নোহর।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে হঠাৎ বিকট শব্দে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ঘরের থাই গ্লাসের জানালা ভেঙে যায়। ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়। এসময় ঘুমিয়ে ছিলেন দুই শিশু সন্তান নিয়ে কাওছার-শান্তা দম্পতি ঘুমিয়ে ছিলেন।