ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জনপ্রিয় হয়ে উঠছে রায়পুর সহ জেলা জুড়ে ছাদ বাগান, ফলের পাশাপাশি সবজি চাষে আগ্রহ

মো.ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ, করেসপন্ডেন্ট : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৪ মে ২০২২ ০৮:২৩:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ছজনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ছে আবাসস্থল। কমছে ফসলি জমি। ফলে দিন দিন ছোটো হয়ে আসছে চাষাবাদের জমি পরিমাণ। অন্যদিকে কংক্রিটের শহরের মানুষের গাছ লাগাবার মতো জায়গা পাওয়া এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে।তাই শখ করে বাগান কিংবা নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য শহরের মানুষদের জন্যে ছাদের কোনো বিকল্প নেই। এসব দিক বিবেচনা করে রায়পুর সহ জেলাজুড়ে  দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ছাদ বাগান। সৌখিন বাগানিরা বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন নানা ধরনের ফল, ফুল ও সবজি বাগান। এসব ছাদ বাগানে বিভিন্ন জাতের মৌসুমী ফল, ফুল ও সবজি শোভা পাচ্ছে।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়,জেলা সদর সহ ৫টি উপজেলায়  প্রায় ৪৫০টি ছাদ বাগান গড়ে উঠেছে। ছাদ বাগান থেকে নিরাপদ ফল ও সবজি উৎপাদন করা সম্ভব বলে তারা উৎসাহিত করছেন। 

 

গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকে বাড়ির ছাদে ফল, সবজি ও ফুল বাগান করে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছেন অনেকে। পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদেরও চাহিদা পূরণ করতেই ছাদ বাগানের প্রতি ঝুঁকছে শৌখিন মানুষ।

 

ফলে বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ ও নানা জাতের সবজি ও ফুলের চাষ করা হচ্ছে। এ যেন বিপন্ন প্রকৃতির মাঝে সবুজের বিপ্লব। বিশুদ্ধ অক্সিজেনের কারখানা। আর এমনি এক অক্সিজেনের কারখানা গড়ে তুলেছেন পশ্চিম দালাল বাজারের ওসমান পাটোয়ারীর সহধর্মিণী নাজমুন নাহার । বাগান পরিদর্শনে যেয়ে দেখা যায়  কমলা, মাল্টা, ডালিম, লেবু, পেয়ারা, আমড়া, ড্রাগন, আনারসহ বিভিন্ন প্রকার ফল। ফলের পাশাপাশি আছে সবজি ও বিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ। সৌখিন ছাদ বাগানি নাজমুন নাহার  বলেন, গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকে বাগান করেছি। পরিবারের পুষ্টির চাহিদাও মিটছে। ভেজালমুক্ত ফল ও সবজি খাচ্ছি। পাশাপাশি অক্সিজেনেরও চাহিদা পূরণ হচ্ছে। বর্তমানে বাগানে ঝুলছে বিভিন্ন প্রকারের মৌসুমী ফল। বাগানে কমলা, মাল্টা, ডালিম, ফজলি আম, লেবু, পেয়ারা, আমড়া, ড্রাগন, শরুফা, জাম্বুরাসহ ২৩ প্রকার ফলের গাছ। আছে করলা, চিচিংগা, ঝিংগা, কাচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, পুদিনা পাতা, লাল শাক ও বিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ। বর্তমানে বাগানে ঝুলছে বিভিন্ন প্রকারের মৌসুমী ফল ও সবজিও। 

 

রাখালিয়া ইউছুপ ডাক্তার বাড়ির প্রবাসী আবুল খায়েরের ছাদ বাগানে রয়েছে আরো অসাধারণ ফল ও ফুলের গাছ ।গাছ গুলোতে ঝুলছে প্রায় শতাধিক  ড্রাগন, ইন্দোনেশিয়ান আঁখ, পেপিলোমেনেট সহ বিভিন্ন প্রকার ফল। ফলের পাশাপাশি আছে সবজি ও বিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ। এ ছাড়াও আছে  বিভিন্ন প্রকার ফুল।

 

 আবুল খায়ের বলেন আমি হঠাৎ করে ফলপ্রেমী হয়ে উঠি। বিভিন্ন সময়ে বিদেশ থেকে, দেশ থেকে ভিন্ন রকম ফলের গাছ সংগ্রহ করি। অবসর সময়ে বাগানে সময় দিচ্ছি। নিরাপদ ফল ও সবজি ছাড়াও পাচ্ছি অক্সিজেন। আমার ছাদ বাগান হয়ে উঠেছে অক্সিজেন চেম্বার। আমার ছাদ বাগান দেখে অনেকেই নতুন করে ছাদ বাগান করেছে।

 

রায়পুর উপজেলা কৃষি অফিসার তাহমিনা আক্তার বলেন, বাড়ির মালিকদের সাথে কথা বলে ছাদে বাগান করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছি প্রতিনিয়ত। বাড়ির পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সম্ভব হচ্ছে। তার দেখাদেখি বিভিন্ন ব্যক্তি ছাদে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা করে আসছি। তিনি আরো জানান, ছাদ কৃষি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা যদি সবুজা নগরী চাই, অর্থাৎ “গ্রীন সিটি” চাই তাহলে দু’ভাবে আমরা করতে পারি। পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণ করে। প্রত্যেকটি সুউচ্চ ছাদ ব্যবহার করে। ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি।

 

তিনি আরও বলেন, ছাদ বাগান থেকে প্রায় বারো মাসই ফল এবং সবজির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ছাদ বাগানের পরামর্শ দিয়ে থাকি। আগামীদিনে ছাদ বাগানের মাধ্যমে পুষ্টি ও নিরাপত্তা পূরণ হবে।চাষাবাদের জমি কমে আসলেও, মানুষের মন থেকে কিন্তু হারিয়ে যায়নি সবুজের হাতছানি পাওয়ার আশা। এ কারণেই আধুনিক ফ্ল্যাট বাড়িগুলোর ছাদে সকলেই ফল ও ফুলের বাগান গড়ে তুলবেন এমটাই প্রত্যাশা আমাদের।