ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সাদ্দাম হোসেন (৩২) নামে স্থানীয় এক সাংবাদিককে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে তার বাড়িঘরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টার দিকে শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সাদ্দাম হোসেনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মহেশপুর গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে এবং চ্যানেল২৪-এর ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি।
অভিযুক্ত বিপ্লব হোসেন উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে এবং ফিরোজ আহমেদের বাড়িও একই গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজার দিয়ে হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলেন সাদ্দাম হোসেন। এ সময় বাজারে নিজের ওষুধের দোকান থেকে বেরিয়ে এসে বিপ্লব হোসেন তার সঙ্গে তর্কে জড়ান। বিল্পবের চাচা ফিরোজ আহমেদ ছুটে এসে সাদ্দামের গায়ে আঘাত করেন।
সাদ্দাম প্রতিহত করার চেষ্টা করলে বিপ্লব ও ফিরোজ দুজনে মিলে তাকে মারধর করেন। সাদ্দামের পরিচিতরা ছুটে এলে ওই দুজন সরে যান। পরিচিতরা সাদ্দামকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে আহত সাদ্দাম হোসেন বলেন, ২০২২ সালের প্রথম দিকে আমার ফেসবুকে কোনো ছবি আপলোড করলে কয়েকটি আইডি থেকে বিরূপ মন্তব্য করা হতো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমি সদর থানায় ওই আইডির বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করি। পরবর্তীতে চলতি বছরের জুলাই মাসে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ইউনিট বিপ্লব হোসেনকে শনাক্ত করে ধরে নিয়ে আসে। তিনি আমার কাছে ঘটনার ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন। আমার ধারণা এ ঘটনার জেরে রাগের বশবর্তী হয়ে বিপ্লব ও তার চাচা আমার ওপর হামলা করেছেন।
সাদ্দাম আরও বলেন, শুধু তাই নয়, মারধরের পর তারা লোকজন নিয়ে আমার বাড়ি ঘরে ইটপাটকেল মেরেছে। তাদের বিরুদ্ধে সঠিক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
মারধরের বিষয়ে বিপ্লব হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক না। আমি বা আমার চাচা সাদ্দামের ওপর কোনো আঘাত করিনি। তবে পূর্বের একটি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব নিয়ে আমি তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কিছু বাজে মন্তব্য করেছিলাম। পরে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আমি তার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম।
এদিকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফিরোজ হোসেনের বিষয়ে জানতে জরুরি বিভাগের মোবাইল নম্বরে কল দিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন, রাতে বিরক্ত করার জন্য ফোন দিয়েছেন কেন। রাতে ফোন দিতে বলছে কে। এরপরই তিনি কিছু না বলে লাইন কেটে দেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, সাদ্দাম হোসেনের ঠোঁটের বাম পাশে কেটে গেছে। সেখানে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু আঘাতের চিহ্ন আছে। তবে শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে সাদ্দামের উপর এই ন্যাক্কারজক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান টিপু, ঝিনাইদহ টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শিপলু জামান, সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসানসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।