দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো হয়রানি ছাড়াই মানুষ এখন ভূমিসেবা পাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশসেবায় রূপকল্প ২০২১ নেওয়া হয়, যা অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
জাতীয় ভূমি সম্মেলন-২০২৩ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ৭টি উদ্যোগ ও প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ভূমি নিয়ে সামাজিক-পারিবারিক ছাড়াও বিভিন্নভাবে সমস্যা দেখা দেয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার গঠনের পরই সর্বোচ্চ ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমির কর মওকুফ করেন। পাকিস্তান আমলে ভূমির যত সার্টিফিকেট মামলা ছিল সব মামলা বাতিল করেন বঙ্গবন্ধু। সেই সঙ্গে ভূমিহীনরাও যেন জমি পায় গুচ্ছগ্রামের মাধ্যমে তার ব্যবস্থা করেন।
তিনি বলেন, ভূমি হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পদ। ভূমির সঙ্গে মানুষের বন্ধন অবিচ্ছেদ্য। আমাদের দেশে এই ভূমি নিয়েই বিভিন্নভাবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দেয়। সেটা সামাজিকভাবে হোক, পারিবারিকভাবে হোক।
সরকারপ্রধান বলেন, পাকিস্তান আমলে যত সার্টিফিকেট মামলা আমাদের কৃষকদের বিরুদ্ধে ছিল সব মামলা তিনি (বঙ্গবন্ধু) প্রত্যাহার করে নেন। সার্টিফিকেটের মামলাগুলো তখন বাতিল করে দেন। বাংলাদেশকে নতুন অগ্রযাত্রায় নিয়ে যেতে শুরু করেন। আমাদের দেশে নদী ভাঙনে অনেক মানুষ ভূমিহীন হয়ে যায়, ঘরবাড়িবিলীন হয়ে যায়, সেই ভূমিহীন মানুষগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য গুচ্ছগ্রাম পরিকল্পনার মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি ১০০ বিঘার বেশি জমি কারো থাকবে না। সেগুলো ভূমিহীনদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে সে ব্যবস্থা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রহণ করেছিলেন। ভূমি নিয়ে মানুষের যে সমস্যা সেই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা সরকারে আসার পর থেকে উদ্যোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, ভূমি ব্যবহারের জন্য যে জটিলতা থাকে সে জটিলতা যাতে না থাকে আমরা প্রথমে সরকারে এসেই জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১ প্রণয়ন করি। সেই সঙ্গে জনগণ বাড়ছে, নগরায়ন হচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে, খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো, তাছাড়া জমির ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একটা নীতিমালা ব্যবহার হয়। আমাদের ভূমিগুলো যেন যথাযথভাবে ব্যবহার করা যায়, অহেতুক যেন ব্যবহার না হয়, ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়, সবগুলো বিবেচনা করে ব্যবহার নীতি ২০০১-এ আমরা তা অন্তর্ভুক্ত করি।
ডিজিটাল ব্যবস্থার ফলে ভূমি খাতে প্রতিদিন ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হচ্ছে এবং ৭৭০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পারিবারিক দ্বন্দ্ব দূর ও ভোগান্তি রোধে ভূমির বণ্টননামা ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। আগামী পহেলা বৈশাখ ১৪৩০ থেকে দেশব্যাপী ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হবে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।