জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আরো এক বছর তিন মাস। কিন্তু এরই মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আগামীতে কোন্ দল থেকে কে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোন্ এলাকায় কে এমপি নির্বাচিত হলে জনস্বার্থ প্রধান্য পাবে তা নিয়েও কম আলোচনা হচ্ছে না। এই আলোচনায় উঠে আসছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা। স্থান পেয়েছে নতুন নেতৃত্বের নাম।
সিলেট অঞ্চলও ওই আলোচনা থেকে পিছিয়ে নেই। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এই আলোচনার মধ্য দিয়েই বের হয়ে আসছে জনবান্ধব প্রার্থীদের নাম।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে সিলেট-৩ আসন গঠিত। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব। এই আসনে আওয়ামী লীগসহ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থীর নাম আলোচনায় উঠে আসছে।
স্থানীয়রা আগামী সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৩ আসনে জনবান্ধব প্রার্থী কামনা করছেন। এই আলোচনায় স্থান পেয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত যার রয়েছে বিশাল অবস্থান। রাজনীতিতে প্রভাবশালী এই নেতাকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূল থেকে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা কাইয়ুম চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার বিভিন্ন দিকও তুলে ধরেছেন।
নেতাকর্মীরা জানান, ১৯৮১ সালে ছাত্রদলের রাজনীতি দিয়ে রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে কাইয়ুম চৌধুরীর। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতি করেছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন তিনি। ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি। গত মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলনে তৃণমূলের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
দলীয় সূত্র জানায় বিভিন্ন সময় কাইয়ুম চৌধুরী রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপির সরকারের সময় এম সাইফুর রহমান ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী। অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন কাইয়ুম চৌধুরী। ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ছিলেন। ছিলেন ক্রিকেট অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান। এসব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি রেখেছেন সফলতার সাক্ষর।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, কাইয়ুম চৌধুরীর সামাজিক কর্মকান্ডে মানবিকতা ফুটে উঠেছে। করোনা বিপর্যয় ও দুর্যোগের সময় লকডাউনের মধ্যেও কাইয়ুম চৌধুরী সহায়তার হাত বাড়িয়ে ছুটে বেরিয়েছেন গ্রাম থেকে গ্রামে। লকডাউনে কর্মহীন হওয়া খেটে খাওযা মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন। সিলেট-৩ আসনের ২০ টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে গেছেন অসহায় মানুষের খবর নিতে। করোনা দুর্যোগের প্রায় পুরোটা সময় ছিলেন অসহায মানুষের পাশে।
এ বছরের ভয়াবহ বন্যা শুরু হতেই কাইয়ুম চৌধুরী দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ছুটতে থাকেন বন্যাকবলিত এলাকায়। পানিবন্ধী মানুষজনকে উদ্ধারের পাশাপাশি তাদের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্য সহায়তা। বন্যার পুরো সময়টা সিলেটের বন্যা কবলিত সর্বত্র ছুটে গেছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
গত কয়েক বছরে কয়েকটি মামলার আসামি হয়েছেন কাইয়ুম চৌধুরী। দলীয় সূত্র বলেছে, এই অবস্থার মধ্যেও তিনি নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। অনেক নেতাকর্মী অসংখ্য মামলায় জর্জিরত। তাদেরকে সব ধরণের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছেন। কেউ সহযোগিতার জন্যে গেলে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন কাইয়ুম চৌধুরী।
আগামীতে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপি থেকে সিলেট-৩ আসনে কাইয়ুম চৌধুরী মনোনয়ন লাভ করবেন-এমনটা আশা করছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা।
দৈনিক বায়ান্ন থেকে যোগাযোগ করা হয় কাইয়ুম চৌধুরীর সাথে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা জানতে চাওয়া হয়। কাইয়ুম চৌধুরী জানালেন দল ওই ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিএনপির এখন কাজ হচ্ছে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা। এসব বাস্তবায়নে স্থানীয়ভাবে দলকে আন্দোলনমুখী করতে দায়িত্ব পালন করছি। তবে দল যখন নির্বাচনে যাবে, তখন আমাকে মনোনয়ন দিলে প্রতিদ্বন্ধিতায় মাঠে নামব।