নানা আয়োজনে ৪৬তম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উত্তোলন, আনন্দ র্যালি, কেক কাটা, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনুর রহমান।
পতাকা উত্তোলন ও কেক কাটা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি আনান্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি অনুষদের ৩৬টি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারি, ইবি ল্যাব্রেটরি স্কুল এ্যান্ড কলেজ ও ইবি শাখা ছাত্রদল অংশগ্রহণ করেন। র্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ জিয়াউর রহমান কর্তৃক স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরে গিয়ে শেষ হয় এবং ভিত্তিপ্রস্তরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। পরে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই বিপ্লবের ওপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এসময় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি, হলসমূহের প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন টিএসসিসির পরিচালক ও হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ও চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামরুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। ইসলামী মূল্যবোধের প্রচার, ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্য এবং আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে সমন্বয় সাধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম আছে কিন্তু কাজেকর্মে কোনো ইসলাম নাই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল ইসলামী জ্ঞানের পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞানের সমন্বয় ঘটান। কিন্তু গত ১৮ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম ত চর্চা হয়নি বরং নোংরামির চর্চা চলে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল তা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমন হওয়া উচিত, যার ইসলাম ও আধুনিক জ্ঞান থাকবে। গণঅভ্যুত্থানের পেছনে যে মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্যর ছিল সেদিকে এগিয়ে যাবে বলে আশা করছি।
উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে একটি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আজকের এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীরতে আবারো যোগদানের দিনের অঙ্গীকার করে বলছি আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে উন্নয়নের সড়কে আনতে চাই।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান আন্তর্জাতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসলামিক ও আধুনিক শিক্ষার সংমিশ্রণ ঘটানোর লক্ষ্যেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করেছিলেন। আমরা সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছি। আমি ব্যক্তি হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে চেতনায় ধারণ করি এবং তা বাস্তবায়নে কাজ করবো। সর্বোপরি বৈষম্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করবো।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে