গত ২৫ তারিখ সন্ধ্যা ছয়টায় ডাকাত সন্দেহে টলদারী সাদা পোশাকের র্যাবের গাড়িতে হামলা করে কিছু মানুষ। এতে র্যাবের তিন সদস্য গুরুতর আহত হয়। ঘটনার পরপর র্যাব পুলিশের তৎপরতায় বারৈয়ার হাট বাজার থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। হামলার ঘটনার দুদিন পর আজ
২৭ মে শুক্রবার দুপুর একটাই র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক( মিডিয়া) নুরুল আবসার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি জানান। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন একটি বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মাদকদ্রব্যসহ চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ধুমঘাট এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পার্শ্বে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৫ মে ২০২২ খ্রি. তারিখ ১৯৩০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় পৌছালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে উক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা কয়েকটি দল একত্রিত হয়ে ও কিছু দুস্কৃতিকারীরা র্যাবের গাড়ীকে বেরিকেট দেওয়ার চেষ্ঠা করে। সেখানে তারা বেরিকেট দিতে ব্যার্থ হলে পরবর্তীতে বারইয়ারহাট বাজার ফ্রুটওভার ব্রীজের নিচে ০২টি কার্ভাডভ্যান রেখে রাস্তা বন্ধ করে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে গুজব ছড়িয়ে আতংক সৃষ্টি করে ও দুস্কৃতিকারীরা পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে র্যাবের উপর অতর্কিত সশস্ত্র হামলা করে। উক্ত হামলায় দুস্কৃতিকারীরা র্যাবের ব্যবহিত একটি প্রাইভেটকার ভাংচুর এবং ০২ জন র্যাব সদস্যকে গুরুতর আহত করে। আহত র্যাব সদস্যের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য র্যাবের হেলিকপ্টারযোগে সম্মিলিত সামরিক হাসাপাতাল, ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। যেখানে তারা বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম উক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও দুস্কৃতিকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং গভীর ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের চৌকষ আভিযানিক দল অদ্য ২৬ মে ২০২২ খ্রি. তারিখ সারাদিন চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ এবং ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। সাইদুর রহমান সাঈদ (৩৩), পিতা-মফিজুর রহমান, ২। আনোয়ার হোসেন (৪৫), পিতা-নুর আলম, ৩। এস এম শাফায়েত হোসেন (৩৮), পিতা-এস এম জামাল উদ্দিন, ৪। মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিঠু (৩৬), পিতা-বদিউল আলম, ৫। শহিদুল ইসলাম আকাশ (২৫), পিতা-নুর ইসলাম, ৬। সোয়েব উদ্দিন আবির (২৯), পিতা-ওয়াহিদুর রহমান, ৭। মোঃ সাইদুল ইসলাম সুমন (৩০), পিতা- মৃত হোসেন আহম্মেদ, ৮। নাহিদ উদ্দিন (৩৩), পিতা- মৃত একেএম সাহাবুদ্দিন, ৯। মোঃ আবু সাঈদ (২৮), পিতা- জাহের আহম্মদ, ১০। মোঃ নাসির উদ্দিন (৩৮), পিতা- মৃত জাফর উল্লাহ, ১১। মোঃ মাঈন উদ্দিন (৩২), পিতা- মৃত মহিউদ্দিন, ১২। ইমাম হোসেন (৩৩), পিতা- মৃত ইউনুছ এবং ১৩। ফাহাদ প্রকাশ ফরহাদ (২৬), পিতা- ফসিউল আলম প্রকাশ কেনু ডাক্তার, সাং-মধ্যম সোনাপাহার, থানা-জোরারগঞ্জ, জেলা-চট্টগ্রাম‘দের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামী ফাহাদ প্রকাশ ফরহাদ এর নিজ হেফাজতে থাকা তার পরিহিত প্যান্টের পকেট থেকে ২,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং তার দেখানো ও শনাক্ত মতে একটি বস্তার ভিতর হতে ৫২ বোতল ফেন্সিডিল ও ০১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। আটককৃত আসামীদের উল্লেখিত ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সকলেই বিষয়োক্ত ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও দুস্কৃতিকারী বলে অকপটে স্বীকার করে।
ঘটনাস্থানের সিসি টিভির ফুটেজ এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দুস্কৃতিকারীদের পরিচয় শনাক্ত করে উপরোক্ত আসামীদের গ্রেফতার করা হয় এবং সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে আরো দেখা যায় যে, ধৃত আসামী সাইদুর রহমান সাঈদ ঘটস্থান থেকে একজন র্যাব সদস্যের নিকট হতে একটি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাঈদের দেয়া তথ্য মতে ধৃত আসামী এস এম শাফায়েত হোসেন এর নিকট হতে উক্ত ছিনিয়ে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও উল্লেখিত ঘটনায় সাথে সারাসরি জড়িত এমন আরো কিছু দুস্কৃতিকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে তাদের’কে গ্রেফতারের কার্যক্রম অব্যহত আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান।
আসামি গ্রেপ্তার অস্ত্র-মাদক উদ্ধার এর বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নূর হোসেন মামুন জানান আমরা থানায় এখনো কিছু বুঝে পাই নাই, তাই মামলা এখনো হয় নাই। মামলা হলে বিস্তারিত পরে জানাবো।
এদিকে বারইয়ার হাট বাজার ঘটনাস্থলের আশেপাশে এখনো একটি মার্কেটের বেশ কয়েকটি দোকান দুইদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।