ঢাকা, বুধবার ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ই পৌষ ১৪৩১

শান্তিগঞ্জে ১২ দিনব্যাপী ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৯ মার্চ ২০২২ ০২:৫৫:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন
 
বাংলাদেশে এই প্রথম র্ভাচুয়ালী প্রশিক্ষণ বৃহত্তর আকারে মডেল মেডিসিন শপ দশম ব্যাচের প্রশিক্ষণের সমাপ্তি হয়েছে। ফার্মাসী কাউন্সিল অফ বাংলাদেশ (পি.সি.বি), ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) এবং ম্যানেজমেন্ট সাইন্সেস ফর হেলথ (এম.এস.এইচ) এর সার্বিক সহযোগীতায় ময়মনসিং, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, কুড়িগ্রাম এবং মৌলভী বাজার জেলায় মডেল মেডিসিনশপ স্থাপন ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে অনলাইন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত রবিবার (২৭ মার্চ) দশম ব্যাচের ১২ দিনের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়।
 
এই ধরনের অনলাইন র্ভাচুয়াল প্রশিক্ষণ বাংলাদেশে এই প্রথম বৃহত্তর আকারে শুরু হয়েছিল এবং এই দশম ব্যাচের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে বৃহত্তর আকারে অনলাইন র্ভাচুয়াল প্রশিক্ষণের সমাপ্তি হয়েছে । উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর অর্থায়ন করেছে ব্রিটিশ সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)। ময়মনসিং, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, চাঁদপুর, কুড়িগ্রাম এবং মৌলভী বাজার জেলার ৩৫ জন গ্রেড সি-ফার্মেসী টেকনিশিয়ানের উপস্থিতিতে উক্ত প্রশিক্ষণ 
কার্যক্রমের সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করছেন এম.এস.এইচ (বিএইচবি প্রকল্প) এর মো: রূহুল্লাহ সিদ্দিকী। রবিবার ট্রেনিং এর ১২ তম দিন শেষে সকল ফামর্িিসস্টদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দিপনা দেখা গিয়েছে কারন ট্রেনিং এর বিষয়বস্তু, ডিজাইন এবং নতুন প্রযুক্তির ব্যাবহার নতুনত্ত্ব এনেছে। রূহুল্লাহ সিদ্দিকী সকল ফার্মেসী টেকনিশিয়ানের সঙ্গে আন্তরিক ব্যবহারের মাধ্যমে সকলের মন জয় করেছে। মো: রূহুল্লাহ সিদ্দিকীর স্বপ্ন এই ট্রেনিং প্রোগ্রামটি একটি মডেল ট্রেনিং হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা। এবং এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য সকলের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছেন। এই ট্রেনিং-এ সমাপনি বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রজেক্ট টিম লিডার  (এম.এস.এইচ) মো: নূরুজ্জামান। এই ট্রেনিং প্রোগ্রামে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন শেরপুর জেলার বিসিডিএস এর সভাপতি মো: মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ,  সম্মানিত রিসোর্স পার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (ড্রাগ সুপার সুনামগঞ্জ) মো: সিরাজ উদ্দিন। 
 
এই ১২ দিন প্রশিক্ষনে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল, মডেল মেডিসিন শপ স্থাপন ও পরিচালনার জন্য কিছু আদর্শমান তৈরি হয়েছে। ঔষধ ডিসপেন্সারের ডিসপেন্সিং দক্ষতা, প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা, সেবা প্রদান পদ্ধতি, বিক্রয়কৃত ঔষধের ধরন এবং মডেল মেডিসিন শপের অবকাঠামো প্রতিটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১১ টি আদর্শমান। গুড ডিসপেন্সিং প্র্যাকটিস নিশ্চিতি করণের মাধ্যমে করোনা মহামারি কালীন সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে 
ফার্মাসিষ্ট/ডিপ্লোমা-ফার্মাসিষ্ট/ফার্মেসি টেকনিশিয়ানদের ভূমিকা। 
 
ঔষধ সঠিকভাবে ডিসপেন্সিং অর্থ শুধুমাত্র রোগী বা গ্রাহককে ঔষধ দেয়া নয়। ঔষধ ডিসপেন্সিং মূলত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সর্বশেষ ধাপ যেখানে রোগী/গ্রাহক সেবাদানকারী ডিসপেন্সারের সাথে মূখোমুখি হন। এখান থেকে একজন ডিসপেনসার সঠিক রোগীদের, সঠিক  ঔষধ, সঠিক মাত্রায়, সঠিক পরিমাণে, 
সঠিক মোড়কে প্রদান করে। ডিসপেন্সিং এর উপর অনেক সময় রোগীর বা গ্রাহকের চিকিৎসার ফলাফল নির্ভর করে। অর্থাৎ রোগী ভাল হবে কিনা বা কত দ্রুত ভাল হবে তা সঠিক ডিসপেন্সিং এর উপর নির্ভর করে। 
 
একজন ভাল ডিসপেন্সারের কিছু গুণাবলি থাকা প্রয়োজন যেমন: সাধারণ রোগ এবং ঔষধপত্র সর্ম্পকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা, সদালাপি বা ভাল যোগাযোগ করতে পারা, রোগী/গ্রাহক/ক্রেতাদের ভাল সেবা দিতে পারা, সুন্দর করে লেখায় বা নির্দেশনায় পারদর্শি হওয়া, সকল কাজ গুছিয়ে করতে পারা, সততা ও পেশাদার আচরণ করতে সক্ষম হওয়া এবং সঠিকভাবে কাজ করার মনোভাব থাকা। এছাড়াও অন্যান্য আলোচ্য বিষয় ছিল, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। সপ্তদশ জাতীয় স্বাস্থ্য নীতির মূল লক্ষ্য অত্যাবশ্যকীয় ঔষধের সহজ লভ্যতা, মূল্য নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা এবং সর্বত্র সেগুলোর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা। দেশীয় ঔষধ শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
 
 ময়মনসিং, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, চাঁদপুর, কুড়িগ্রাম এবং মৌলভী বাজার জেলায় 
যে সকল ফার্মাসিষ্টরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে ফার্মেসি ম্যানেজমেন্ট সফ্টওয়ার ফ্রি প্রদান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণের একটি অংশ হিসেবে এম.এস.এইচ এর মো: রূহুল্লাহ সিদ্দিকী সফ্টওয়ার সর্ম্পকে 
ফার্মাসিষ্টদেরকে স্পষ্ট ধারনা প্রদান করেন। বাংলাদেশ সরকার সকল ফার্মেসী টেকনিশিয়ানদের মাঝে মডেল মেডিসিন শপ-এই নতুন ধারনাটি ছড়িয়ে দিতে চায়। অধিকাংশ ফার্মেসী টেকনিশিয়ানরা এই প্রশিক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত এবং তারা এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের ফার্মাসীকে মডেল করতে চায়।