লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জমিজমার লোভে চার ছেলে ও এক মেয়ে কর্তৃক জন্মদাতা বাবাকে (৬৮) রাতের আঁধারে হাত-পা বেধে গাড়িতে তুলে অন্য স্থানে গুম করার অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনায় বৃদ্ধকে উদ্ধার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার উত্তর চরবংশি ইউনিয়নের পূর্ব চরবংশি গ্রামের হোডার বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে এমন ঘটেছে। ঘটনার পর এলাকায় তোলপাড় চলছে এবং এখনো গুম হওয়া বৃদ্বের মা'সহ পরিবারে সদস্যরা বাড়িতে কান্নার মাতম চলছে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাবেক মেম্বার আবু তাহের ও বর্তমান মেম্বার মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বৃদ্ধ মো.উল্লাহ (৬৭) তার স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে এলাকায় বসবাস করতেন। তার কৃষি জমি ও ২ কোটি টাকার ১৫টি গরুর দুগ্ধ খামারসহ তিন একর সম্পদ রয়েছে। ৪ ছেলের সবাই পরিবার নিয়ে পৃথক বসবাস করছে।
সন্তানদের দাবী তাদের পিতা জীবিত অবস্থাতেই সম্পদের বন্টন হতে হবে। তবে তাদের পিতার বক্তব্য ছিলো নাকি, জীবিত থাকা অবস্থা কোনো সম্পদ বন্টন হবে না। আমাদের সন্দেহ এ জমির বিরোধ নিয়েই বৃহস্পতিবার রাত ৩টার সময় ছেলেরা সবাই মিলে বৃদ্ধ মোহাম্মদ উল্লাকে হাত, পা, মুখ বেঁধে পাগল ও মাদক সেবী সাজিয়ে প্রচারনা চালিয়ে একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে কয়েকজন গ্রামবাসী গাড়িটি প্রতিরোধের চেষ্টা করলে ইব্রাহীম ও সবুজ নামের দুইজনকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় বৃদ্ধ'র এক ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে তার বাবার গরুর খামারে কাজ করতে দেখা যায়। রাতের আঁধারে কেন চিকিৎসার জন্য হাত বেঁধে ঢাকা হাসপাতালে পাঠানো হলো !কোন হাসপাতালে আছেন তিনি? তার আরো তিন ভাই কোথায় এ প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারেনি জাহাঙ্গীর।
গ্রামবাসীরা জানান, ছেলেরা কর্তৃক তাদের বৃদ্ধ বাবাকে গুম করার ঘটনাটি রায়পুরের হাজীমারা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্টো বাদী পক্ষকে হুমকি ধমকি দেন। পরবর্তীতে গ্রামবাসী নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে বিষয়টি অবহিত তরলে থানার ওসি তাদেরকে থানায় ডেকে পাঠান। পরে এলাকাবাসী মামলা করতে চাইলে ওসি মামলা না নিয়ে সংবাদ প্রচার করানোর কথা বলেন।
রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিপন বড়ুয়া জানান, বৃদ্ধ মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছে তার বাবার মানসিক সমস্যা থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য রাতে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। সুস্থ হলেই বাড়িতে নিয়ে আসা হবে।