ঢাকা, শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭শে পৌষ ১৪৩১

সানলাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির কুষ্টিয়া শাখার গ্রাহক প্রতারনার অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৫৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

উন্নত বিশ্বে মানুষের জীবন মান উন্নত করতে জীবনের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য, যানবাহন, সন্তানের লেখাপড়া, আসবাবপত্র, চাকুরী, বিয়ে, ব্যবসাসহ সকল ক্ষেত্রে  ইনসিওরেন্স জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে ভিন্ন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশে ইনসিওরেন্স ব্যবসা।  ইন্সুরেন্স এর প্রতি মানুষ দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ইনসিওরেন্স কোম্পানির প্রতিনিধির জালিয়াতি আর বিভিন্ন কোম্পানির প্রতারনা তার অন্যতম কারন। এমনই এক অভিনব প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে সান লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি কুষ্টিয়া অফিসের বিরুদ্ধে। কুষ্টিয়ায় সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি বীমার মেয়াদ পূর্তির ৬-৭ বছর পেরিয়ে গেলে গ্রাহকের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ একাধিক বীমা পলিসি গ্রাহকের। টাকা ফেরত না দিয়ে কৌশলে গ্রাহকের বীমার বই জমা নিয়ে নিয়েছে কুষ্টিয়া শাখার ম্যানেজার। মোছাঃ নার্গিস আক্তার সাং- টাকিমারা, পলিসি নাম্বারঃ ৪৪০০২০৮*০-* কুষ্টিয়া মঙ্গলবাড়িয়া শাখার ৩৬,০০০ হাজার টাকার বীমা করেন। ২০১৮ সালে মেয়াদ শেষ হলেও এখনো বীমার টাকা বুঝে পাননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন,২০১৮ সাল থেকে সানলাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির কুষ্টিয়া অফিসে ঘুরে কোন সমাধান পাইনি। অফিস আগে এনএস রোডে লাভলি শপিং মলে ছিলো, এরপর কাস্টমস মোড়, চৌড়হাস মোড় ইত্যাতি স্থানে স্থানান্তরিত করছে। আমরাও সকল স্থানে ঘুরে যাচ্ছি কিন্তু আমাদের টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এ বিষয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, একটি বহুতল  ভবনের উপরে ছোট্ট একটি সাইনবোর্ড দেওয়া। ভিতরে কুষ্টিয়া এরিয়া অফিসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) আব্দুল হালিম এর কাছে গ্রাহকের টাকা ফেরত প্রসংঙ্গে জানতে চাইলে তিনি জানান, সবার টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অফিসের ফান্ডে বর্তমানে টাকার ঘাটতি আছে। কারোর ইমার্জেন্সি লাগলে ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ইনসিওরেন্সটি বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বোনের। চৌড়হাস এলককার রফিক নামে একজন জানান, আমার মায়ের নামে বীমা করেছিলাম, মেয়াদ শেষ হয়েছে ৫-৬ বছর আগে। টাকা চাইতে গেলে হয়রানি করছে। এর আগে কাস্টমস মোড়ে অফিস থাকার সময় কয়েকবার গিয়ে দেখি ঘনঘন ম্যানেজার বদলায়। একজন স্থানীয় ১৭ নং পৌর কাউন্সিলর। তিনি তো গরম ভাবে কথা বলে। টাকা চাইলেই স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বোনের কোম্পানি বলে হুমকি দেয়। তানভির নামে একজন জানান, এই বীমা অফিসে আমার খালার বীমার টাকা চাইতে গেলে প্রথমে এক মহিলা
বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, এই কোম্পানি শত শত গ্রাহকদের লক্ষ লক্ষ বীমার টাকা এভাবে আটকে রেখেছেন। এভাবেই শত শত অসহায়, দরিদ্র ও অস্বচ্ছল গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রাহক হয়রানি
ছাড়াও এই অফিসের ভেতরে একটি শোবার ঘর (বেড রুম) এর সন্ধান মিলেছে। ঘরে একটি খাট পাতা রয়েছে। সেখানে ৪ জন যুবতী মেয়ে থাকে বলে জানা গেছে। অফিসে বেড রুম রাখা বৈধ কি-না বা সেখানে কোনো অনৈতিক কর্মকান্ড চলে কি-না এব্যাপারে বেশকিছু গ্রাহক এবং উপস্থিত লোকজন প্রশ্ন
তুলেছেন। কুষ্টিয়া এরিয়া অফিসের ইভিপি আব্দুল হালিমের গ্রাহক হয়রানির এ কর্মকান্ড একপর্যায়ে গ্রাহকদের প্রচেষ্টায় থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। পুলিশ এসে ইভিপি আব্দুল হালিম এবং গ্রাহকদের থানায় নিয়ে যান। উপস্থিত গ্রাহকরা বলেন, আমাদের বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে ৫-৬ বছর আগে। কারো ২০১৭ সালে, কারো ২০১৯ সালে। অফিসে ঘুরে ঘুরে চটি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। তাদের চমকদার কথায় ভবিষ্যতের চিন্তা করে বীমা করে এখন চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। এছাড়া কেউ কেউ ছাগল, মুরগী, বিক্রি করে বীমার টাকা পেতে ১০-১২ হাজার
টাকা ঘুষ দিয়েও বীমার টাকা পাচ্ছেন না বলে জানান। এব্যাপারে সানলাইফ ইন্সুইরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের কুষ্টিয়া এরিয়া অফিসের ইভিপি আব্দুল হালিম জানান, কোম্পানির ফান্ড ঘাটতির কারণে গ্রাহকদের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। তবে যে সকল গ্রাহক কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে তাঁদের টাকা দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু ফান্ড ঘাটতির দায় গ্রাহকদের কেন এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।