ঢাকা, শুক্রবার ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭শে পৌষ ১৪৩১

হাইকোর্টের জামিন নিয়ে লাপাত্তা ৩ খুনের আসামি পুলিশ সদস্য সৌমেন রায়

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৮ মে ২০২৩ ১২:০২:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর


কুষ্টিয়া শহরের অন্যতম প্রধান সড়ক আঃরহিম সড়ক এর কাস্টমস মোড়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে এক পুলিশ সদস্য তার সরকারী পিস্তল দিয়ে গুলি করে তার কথিত স্ত্রী, সন্তান ও স্ত্রীর বন্ধুকে হত্যা করে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় একমাত্র আসামী পুলিশের এএসআই (বহিষ্কার) সৌমেন রায়। ঘটনার সময় হাতেনাতে স্থানীয় জনতার হাতে আটক পুলিশের এই সদস্যকে বিভাগীয় অস্ত্র সহ কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বিরুল আলম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘদিন তদন্ত করে সৌমেন রায় এর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর চলতি বছর প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীদের বয়ান নেওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম। সকল স্বাক্ষীদের সত্যবয়ান আসামি পুলিশ সদস্য সৌমেন রায়ের বিরুদ্ধে গেলে তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। মহামান্য আদালত শর্তসাপেক্ষে জামিন দিলে সৌমেন সকল শর্ত ভঙ্গ করে লাপাত্তা বলে জানাগেছে।  জামিন পাওয়ার পর মামলার ৪ টা ডেট পার হয়ে গেলেও আসামি কোর্টে আসেনি বলে জাজানান বাদি পক্ষ।  মামলারবাদি হাছিনা বেগম জানান, "আমার মেয়ে, ৫ বছরের নাতিন সহ তিন জনকে হত্যার আসামি কিভাবে জামিন পায়?  আদালতের জামিন নিয়ে সৌমেন সম্ভবত ভারতে পালিয়ে গেছে। তা না হলে মামলার গত ৪ ডেটে আসামি কেন আদালতে হাজির হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, নাম ও ধর্ম পরিচয় গোপন করে আমার মেয়েকে বিয়ে করে। এরপর প্রথম বউ ঘটনা জেনে গেলে আমার মেয়ে আসমা ও তার শিশু সন্তান রবিনকে হত্যার উদেশ্যে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। আসামি জামিনে বাইরে এসে লাপাত্তা হওয়ায় আমি সঠিক বিচার নিয়ে সন্দিহান। আসামি পুলিশের সদস্য বলে সে ভিতরে এবং বাইরে অনেক সুবিধা পাচ্ছে। আমার ধারনা অন্য পুলিশের সহযোগিতায় সৌমেন ভারতে পালিয়ে গেছে।"

এ বিষয়ে মামলার এজাহারভুক্ত স্বাক্ষী মাসুদ সদদারের সাথে কথা হলে তিনি জানান " আসামি সৌমেন রায়কে আমরা হত্যা করকে দেখিছি। সেই কথায় আদালতে জানিয়েছি। আরেক স্বাক্ষী সুজন ইসলাম জানান, আমার চোঁখের সামনে শিশু রবিন সহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করতে দেখেছি, সেটাই আদালতে বলেছি। আশাকরি আসামির ফাঁসি হবে। তবে আসামি যদি জামিনে বাহির হয়ে লাপাত্তা থাকে যদি ভারতে পালিয়ে যায় তাহলে ফাঁসি হলেও তো কোন লাভ নাই।"  কুষ্টিয়া মডেল থানার একটি সূত্র থেকে জানা যায়, আদালত যখন ওয়ারেন্ট জারি করবে তখন আমরা আসাসিকে আটক করবো। এর আগে কিছু করতে পারি না। এদিকে সৌমেনের ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।

ঘটনার বিবরন, ২০২১ সালের ১৩ জুন আনুঃ ১১ টা ১৫ মিনিটে খুলনা ফুলতলা থানার কর্মরত এএসআই   সৌমেন রায় (৩৪) পিতা- মৃত সুনিল রায়, মাতা- ঝর্না   রায়, গ্রাম- আসবা, থানা-মাগুড়া সদর, জেলা - মাগুড়া, কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড়ে নাজ ম্যানশন মার্কেটের নিচ তলায় আসমা খাতুন (৩০), রবিন (৬) ও শাকিল (৩২) কে গুলি করে হত্যা করে। হত্যা কান্ডের তদন্ত করেন সদর থানার সেই সময়ের ইন্সপেক্টর নিশিকান্ত।