ঢাকা, শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭শে পৌষ ১৪৩১
বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়

ইমামের হাতে কলেজছাত্রী খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ১০ মে ২০২৩ ১০:০২:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গাজীপুরে এক কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মসজিদের এক ইমাম। এসময় বাধা দিতে এলে অস্ত্রের কোপে আহত হন নিহতের মা ও বোন। সোমবার (০৮ মে) রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।  

 

 

নিহত হলেন- গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে রাবেয়া আক্তার (২৩)। আহতরা হলেন, মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজা।

গাজীপুর মেট্রোপলিটনের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক জানান, দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফ তার স্ত্রী চার মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি সালনা বাজারে আরএফএল প্লাস্টিক শো রুমে চাকরি করেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার (২১) ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারি মহিলা কলেজ হতে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সে স্টুডেন্ট ভিসায় ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশে ভিসাসহ আনুসাঙ্গিক কার্যক্রম প্রসেসিং করতে থাকে। তার ছোট দুই মেয়ে খাদিজা ও জান্নাতকে কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মো. সাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন।  

আব্দুর রউফের ছোট দুই মেয়েকে পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারের দিকে কু-নজর পড়ে ইমাম সাইদুল ইসলামের। কিছুদিন পরে সে রাবেয়া আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তার পরিবার সরাসরি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এছাড়া তাকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করা হয়। এতে সাইদুল ইসলাম ক্ষীপ্ত হয়ে রাবেয়ার কলেজে এবং বাইরে যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত করতো এবং রাবেয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দিতো।  

একপর্যায়ে সাইদুল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাবেয়া আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার কক্ষে ঢুকে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাথারীভাবে কোপাতে থাকে। রাবেয়ার ডাক-চিৎকারে তার মা, ছোট বোন হাবিবা ও খাদিজা দৌড়ে রাবেয়ার কক্ষে গিয়ে দেখে সাইদুল ইসলাম ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে এলোপাথারীভাবে কোপাচ্ছে। তারা রাবেয়াকে রক্ষা করতে গেলে মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকেও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় সাইদুল ইসলাম।  

পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাবেয়া আক্তার মারা যায়। গুরুত্বর আহত মা ছোট বোনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।  

এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদি হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মঙ্গলবার একটি মামলা দায়ের করেছেন।