সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ভারি বর্ষনের ফলে উপজেলা প্রশাসন, পৌর শহর এলাকা থেকে শুরু করে ৯টি ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
মঙ্গলবার কানাইঘাট সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কানাইঘাট বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে হাটু পানি থেকে কোমর পানি বিরাজ করায় অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এখনো বানের পানি।
কানাইঘাট-দরবস্ত, গাজী বোরহান উদ্দিন রোডের নিচু এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় সিলেট শহরের সাথে কানাইঘাট সদরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পরিবহনের অভাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে ও সংকট দেখা দিয়েছে।
এছাড়াও অনেক এলাকা নতুন করে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। হাজার হাজার বাড়িঘর এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর দিন পার করছেন।
উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ন বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কোন ধরনের ত্রাণসামগ্রী পাচ্ছেন না দূর্যোগ কবলিতরা। গ্রামীন এলাকার সকল পাকা, কাচা রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় লোকজনদের ঘরেই দিন কাটাতে হচ্ছে ।
এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মমতাজগঞ্জ বাজারের পাশে সুরমা নদীতে নৌকা ডুবে লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির নক্তিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের পুত্র ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান (৫০) নিখোঁজ রয়েছেন। এখন পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
উপজেলার ১৭টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি বিভিন্ন উঁচু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানিবন্দি প্রায় ২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম।
উপজেলার ৯০ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে বলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
কৃষি ও মৎস্য ক্ষেত্রেও বড়ধরনের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভারি বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করায় কানাইঘাটের বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। একই ধারা আরও কয়েকদিন বিরাজ করলে গোটা উপজেলায় ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিবে বলে আশংকা সংশ্লিষ্টদের।