ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কারা এগিয়ে ডেমরার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে

শওকত লিংকন, ডেমরা | প্রকাশের সময় : সোমবার ২০ মার্চ ২০২৩ ০২:২৭:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

রাজধানীর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের পর কারা আসছেন ডেমরা থানার বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে। এ নিয়ে গুঞ্জন চলছে সর্বত্র। সম্মেলনের পর চায়ের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাসহ সব আড্ডাস্থলে চলছে সম্ভাব্য নেতাদের নিয়ে আলোচনার ঝড়। ব্যক্তি ও রাজনৈতিকভাবে সুন্দর ভাবমূতিসম্পন্ন এবং ত্যাগী নেতাদের প্রাধান্য দিয়ে কমিটি গঠন করা হবে এমনটিই প্রত্যাশা সবার।

গত ৩ সেপ্টেম্বর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ডেমরা মহাবিদ্যালয় কলেজ মাঠে। ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হলেও প্রকৃতপক্ষে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় প্রায় ১৮ বছর পর। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ডেমরা থানার ৬৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে অন্তত ২০জন প্রার্থী তাদের সিভি জমা দিয়েছেন।স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের মধ্যে অন্যতম প্রার্থী হিসেবে ভাবছেন জাফর আহমেদ বাবুকে। তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত হরতাল অবরোধ সহ সকল কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬সালে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সহিত পালন করেন। ২০০১ সালে জোট সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে, ২০০৪ সালে আবারো গ্রেফতারের ২মাস  পর জামিনে মুক্তি পান, ২০০৪ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদানের ২ মাসের মাথায় মামলা মোকদ্দমার কারণে সরকারী চাকুরী হইতে বরখাস্ত হন। এছাড়া ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সালে পর্যন্ত বিভিন্ন সময় নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়ে ব্যবসায়িক ভাবে ব্যপক ক্ষতির সম্মুখীন হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০০৬ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে স্টাফ কোয়ার্টার এ ডেমরা পূর্বাঞ্চলের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে উন্মুক্ত মঞ্চ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সাল থেকে অদ্যাবধিপর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার পরিচালনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগরের সকল প্রোগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে।

৬৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অন্তত ৬জন প্রার্থী তাদের সিভি জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে স্থানীয় নেতাকর্মীরা অন্যতম প্রার্থী হিসেবে ভাবছেন মো: দুলাল খানকে। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ ইং সাল পর্যন্ত বৃহত্তর মাতুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্ন্তগত ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৫ থেকে ২০০১সাল পর্যন্ত ১ নং ওয়ার্ড সারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৫ইং সালে ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২০২০ইং সাল পর্যন্ত সারুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

৬৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অন্তত ৫জন প্রার্থী তাদের সিভি জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে স্থানীয় নেতাকর্মীরা অন্যতম প্রার্থী হিসেবে ভাবছেন জয়নাল আবেদীন (হাজারী)কে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান জয়নাল আবেদীন ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ইং সাল পর্যন্ত মাতুয়াইল ইউনিয়নের শুকুরসী ইউনিটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আ, লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় ২০০৪ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে সারুলিয়া ইউনিয়ন আ, লীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র  প্রার্থী শেখ ফজলে নুর তাপস এর পক্ষে শুকুরশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, ‘দুর্দিনে যারা দলের জন্য জীবন বাজি রেখেছেন এবং দলের প্রয়োজনে নিঃস্বার্থভাবে শ্রম দেওয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে কাজ করেছেন, আমরা কেবল তাদেরই নির্বাচিত করব। এ বিষয়ে তদবির করে কোনো লাভ হবে না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, তদবির তো দূরের কথা, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের হাইপ্রোফাইল নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে প্রার্থীদের বিষয়ে বিচার-বিবেচনা করা হবে। এক্ষেত্রে সাংগঠনিক সব নিয়ম অনুযায়ী ডেমরা থানা গঠন করা হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম বলেন, ক্লিন ইমেজের নেতাদের মাধ্যমে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হবে। কোনো ধরনের বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যুরা কমিটিতে স্থান পাবে না।