ভ্যাপসা গরমে চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের। স্থানীয়রা একে তালপানি নামে ডাকে। একটু স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বিক্রি হওয়া রসালো এই ফলের স্বাদ নিচ্ছেন অনেকে। দেশে কচি তালের শাঁস বেশ জনপ্রিয়। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফলে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। এর বেশিরভাগ অংশ জলীয় হওয়ায় এটা খেলে দ্রুত শরীরে পানিশূন্যতা দূর হয়।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে রাস্তার পাশে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়ে বসছেন মৌসুমি এই তাল ব্যবসায়ীরা। একটি তাল কেটে বিক্রি করছেন ৫-১০ টাকায় আর এক বাধা আস্ত তাল ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন । মৌসুমি এ ফল কেউ কিনে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন, কেউবা নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। এসব দোকানে ছোট বড় সব শ্রেণি পেশার মানুষ তালের শাঁস কিনতে ভিড় করছেন। বিশেষ করে উপজেলা স্থানীয় বাজারগুলোতে তালের শাঁস খেতে মানুষের ভিড় বাড়ছে। তবে এক সময় এ অঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তার পাশে কিংবা বসতবাড়িতে অসংখ্য তাল গাছের দেখা মিলতো। কালের বিবর্তনে দিনদিন গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী এসব তাল গাছ বিলুপ্তির পথে । উপজেলার গণমঙ্গল বাজারে কথা হয় তাল বিক্রেতা শহিদুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতি, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবার কাছে তালের শাঁস প্রিয়। আবার মৌসুমি ফল বলে শখের বশেই অনেকে এগুলো কিনে খায়। দামেও বেশ সস্তা তাই বাজারে এর কদরও বেশি।
তাল শাঁস ক্রেতা সোহাগ হোসেন বলেন, আমি মাঝে মাঝে তাল শাঁস কিনে খাই। নরম শাঁস খেতে অনেক ভালো লাগে।
ফজলুর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, নাতি-নাতনী খেতে চাওয়ায় তালের শাঁস কিনছি। প্রতিটি তালের শাঁস ১০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
এ দিকে গাছের মালিকরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গাছে ফলের সংখ্যা কমে গেছে। তাই তালের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। তবে নতুন গাছগুলো বড় হলে এবং ফলন ধরলে এ মৌসুমি ফলের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে তাল বৃক্ষ প্রেমী “পিচ এসোসিয়েশন ” জয়পুরহাট এর সভাপতি রাসেল আহমেদ বলেন,তাল যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বজ্রপাত নিরোধক হিসাবে তাল গাছের ভুমিকা অপরিসীম। তাল গাছের সংখ্যা কমতে থাকায় আমরা প্রতি বছর ২০-৩০ হাজার তাল জীব রোপন করে থাকি। এবছর এর সংখ্যা বাড়োনো হবে।
তালের শাঁস বাজারে বেশ সহজলভ্য। গরমেই ফলটির দেখা পাওয়া যায় । শরীর ও পেট ঠান্ডা রাখে তালের শাঁস। এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যারও সমাধান করে এই ফল।