ঢাকা, রবিবার ১৯ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

জনবল সংকট সহ নানান সমস্যায় জর্জরিত নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:৪৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ময়মনসিংহের নান্দাইলে অধিকাংশ জনবল সংকট ও নানান সমস্যা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তথা উপজেলা সদর হাসপাতাল। এছাড়া হাসপাতালটির ভিতর ও বাহিরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। হাসাপাতালের ভবন, মাঠ, পানি ও পয়োনিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা থাকায় এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগীদের টয়লেটের অবস্থাও নাজুক, যা ব্যাবহার অনুপযোগী। অপরদিকে হাসপাতালের আউটডোর ও রোগীদের বেড থেকে চিকিৎসার খরচের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে একটি চোরচক্র। অথচ হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরার আওয়তায় থাকা সত্বেও রোগীদের নিরাপত্তা কোন ব্যবস্থার জোরদার হচ্ছেনা। প্রায়ই আউটডোরে ছিনতাইয়ের কবলে পড়া রোগী বা রোগীর স্বজনদের চিৎকার শোনা যায়। স্থানীয় ও একাধিক সূত্রে জানাগেছে, হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বেলা ২টার সাথে সাথেই সরকারি চিকিৎসকরা তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থেকে বিভিন্ন ক্লিনিকে ব্যক্তিগত সেবা দিয়ে আসছে। এতে করে সাধারন জনগণ স্বাস্থ্য সেবা নিতে এসে খালি হাতেই ফিরে যেতে হচ্ছে জেলা সদর হাসপাতাল কিংবা বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার স্বাস্থ্য সেবা খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করলেও নান্দাইল হাসপাতালে যেন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি গত ২০২২ সনে ১০০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে এর কোন রুপরেখা দেখতে পায়নি জনগণ। হাসপাতালে সরকারি ৪টি এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে ৩টি অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যে এ্যাম্বুলেন্সটি ভালো আছে, তাও প্রায় সময়ই নানান সমস্যা থাকে বলে জরুরী প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে দেখা যায় না। অপরদিকে নান্দাইল হাসপাতালে জনবল কাঠামোতে চরম জনবল সংকট দেখাগেছে। গত প্রায় তিন বছর যাবত এনেস্খ্যাসিয়া কনসালটেন্ট নাই। তবে হাসপাতালে . এক্সরে, রক্ত ও কফ পরিক্ষা, আলট্রাসনোগ্রাফি সহ বিভিন্ন সিজারিয়ান চিকিৎসা সেবা চালু হলেও হাসপাতালে আয়া, ওয়ার্ড বয়, ক্লিনার ও দারেয়ান সহ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জনবল শূন্য থাকায় রোগীদের সেবা প্রদানে যেন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাত্র দুইজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজ করানো হচ্ছে। যা দিয়ে পুরো হাসপাতালটি পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। জনবলের কারণে হাসপাতালটির ভবনের দেয়াল ও ছাদেও নানা জাতের আগাছা গজিয়ে উঠেছে। এতে দেয়াল ফেটে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। দেয়াল বেয়ে পানি পড়ছে। এতে আয়ু কমছে ভবনের। পাশাপাশি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স সহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কোয়ার্টারগুলো প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। যা বসবাসের অনুপযোগী। এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহমুদুর রশীদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অত্র হাসপাতালে যেখানে ৫ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী থাকার কথা, সেখানে মাত্র ২ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী আছে। ফলে সবকিছু যথাসময়ে পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। এখানে মাস্টাররোলে কয়েকজন লোক কাজ করছে। এছাড়া হাসপাতালে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ৩টি এ্যাম্বুলেন্স ও জনবল সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।