ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

ঝিকরগায় গরীবের চাউল লুট : থানায় অভিযোগ

এম.আমিরুল ইসলাম জীবন, যশোর : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৫৫:০০ অপরাহ্ন | খুলনা

 

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ৭নং নাভারণ ইউনিয়নের অন্তগত হাড়িয়া নিমতলা গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিন্নু (৫০) এর নেতৃত্বে গরীবের চাউল লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ১২জনের নাম উল্লেখ সহ ২০০/২৫০জন অজ্ঞাতনামার বিবাদী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন হাড়িয়া নিমতলা গ্রামের সুজ্জত আলীর ছেলে ও হতদরিদ্রের চাউলের ডিলার হাসান আলী (৩২)। উক্ত অভিযোগে বিবাদীরা হলেন, নাভারণ পুরাতন বাজার গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিন্নু (৫০), হাড়িয়া গ্রামের নিকারী খলিল (৫৫), আঃ রহিমের ছেলে অসিম (৪০), কিতাব আলীর ছেলে জাহিদ (২৬), বায়সা গ্রামের তরিকুল (৪৫), নাহিদ (৪০), মিলন (৪৫), আব্দুল মজিদের ছেলে শরিফুল (৫০), মতিয়ারের ছেলে হাফিজুর (৫০), চাঁন্দেরপোল গ্রামের আঃ রহমানের ছেলে মিজান (৪৫), আসাকের ছেলে সোহাগ ডাক্তার(৪৮) ও বেড়ারুপানি গ্রামের মহব্বতের ছেলে ফন্টু (৪৫)। থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাদি হাসান আলী হাড়িয়া নিমতলা মোড়ে সরকার প্রদত্ত ১৫টাকা কেজি দরে হতদরিদ্রের মাঝে চাউল বিতরণের ডিলার পয়েন্ট থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ সততার সহিত সরকারী নিয়মকানুন মাফিক উক্ত চাউল হতদরিদ্রের মাঝে বিতরণ করে আসছেন। গত ০৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে আওয়ামীলীগ সরকার পতন হওয়ায় উপরোক্ত ০১নং বিবাদী বাদির নিকট ২লক্ষ টাকার চাঁদাদাবী করেন। বাদির নিকট দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিবাদী বাদির ক্ষতিসাধন সহ হাত-পা কেটে নিবে মর্মে হুমকি প্রদর্শন করেন। এমতাবন্থায় অদ্য ০৯ সেপ্টেম্বর অনুমান সকাল ১১টার সময় ১নং বিবাদীর নেতৃত্বে উপরোক্ত বিবাদীরা সহ অজ্ঞাতনামার ২০০/২৫০জন বড় নছিমন গাড়ী ও মোটরসাইকেল যোগে হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়াল, হকিষ্টিক, পিস্তল সহ দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বে-আইনী জনতাবদ্ধে বাদির ডিলার পয়েন্টে অনধিকার প্রবেশ করেন। বাদিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডিলার পয়েন্ট (গোডাউন) এর শার্টারের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ১৬.৩২০ মেঃ টন চাউল, যার সরকারি মূল্য ২লক্ষ ১২হাজার ১শত ৬০টাকার চাউল যে যার মত লুট করে নিয়ে যায়। লুট হওয়া চাউলের ডিও নং ৮২২৯৫৭০, চালান নং ২৪২৫-০০০৬৩৪৯০৭৭, তাং ০৩/০৯/২০২৪ইং। বাদি তার অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন বিবাদী নাহিদ হকিষ্টিক দিয়ে বাদির ভাগ্নে নজরুল ইসলামের পশ্চাৎদেশে স্বজোরে আঘাত করে নীলা ফোলাজখম করে এবং বিবাদী তরিকুল বাদির পরিহিত প্যান্টের ডান পকেট হতে ২৬হাজার ৯শত ৯০টাকার রেডমি নোট ১২টার্চ মোবাইল ফোন জোরপূর্বক ছিনাইয়া নেয়। এছাড়াও বিবাদীরা বাদির ডিলার পয়েন্ট ভাংচুর করে অনুমান ২হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। বর্তমানে উক্ত গ্রামে আতংক বিরাজ করছে। ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রমিজ উদ্দীনের স্ত্রী মমতাজ বেগম ও ছেলে নজরুল ইসলাম বলেন, তারা ২০০/২৫০জন মটরসাইকেলে ডিলার পয়েন্টে এসে তালা ভেঙ্গে নছিমন, ইজিবাইক ও ভ্যানে করে চাউল এবং প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড নিয়ে গেছে। তাছাড়াও টেবিল চেয়ার ভেঙ্গে দিয়ে গেছে। বিবাদী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিন্নু বলেন, আমরা রাজনীতি করি। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হতেই পারে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধেও মামলা হচ্ছে। তাতে কোন সমস্যা নেই। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হতেই পারে অভিযোগের উপর তদন্ত করে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) তদন্ত পরিদর্শক মোঃ ইব্রাহীম আলী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।