মাত্র দেড় বছরের শিশু মাহিদুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে তার পিতা-মাতার ভিন্নরকমের দাবী। পিতার অভিযোগ, তার শ্বশুরালয়ের লোকজন শ্বাসরোধে সাহিদুলকে হত্যা করেছেন। অপরদিকে নিহতের মায়ের দাবী মাহিদুল পানিতে ডুবে মারা গেছে। এই ঘটনায় থানায় দায়ের হয়েছে ইউডি মামলা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বিটঘর গ্রামের।
শনিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে শিশুটির লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ বিটঘর গ্রামের একটি পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। পারিবারিক কলহের জের ধরে শিশু মাহিদুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে শিশুর পিতা মো. বশির উদ্দিন দাবী করছেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বিগত ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামের মো. আলীর ছেলে মো. বশির উদ্দিনের সাথে একই ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামের মো. নুরু মিয়ার মেয়ে শিউলি আক্তারের বিয়ে হয়। বিযের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিলো। এরই প্রেক্ষিতে গত চার মাস আগে শিউলি তার ছেলে মাহিদুল ইসলামকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। তাকে বাড়ি ফেরানোর জন্য বশির উদ্দিন বহু চেষ্টা করলেও শিউলি স্বামীগৃহে ফিরে আসেনি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বশির খবর পান তার ছেলে মাহিদুল পানিতে ডুবে মারা গেছে। তিনি বিষয়টি মানতে নারাজ। তার দাবী, পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুরালয়ের লোকেরা শিশু মাহিদুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। অপরদিকে নিহতের মা শিউলি আক্তারের পরিবারের দাবী, বিয়ের পর থেকেই স্বামী বশির উদ্দিন শিউলীকে অত্যাচার ও নির্যাতন করে আসছিলো। বশির বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করে লাখ লাখ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে। এখন সে শিশুর মৃত্যু নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। মূলত শিশু মাহিদুল সবার অজান্তে খেলা করতে গিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। পুলিশ সেখান থেকে নিহতের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে। নিহতের পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরাইল থানা পুলিশ একটি ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা দায়ের করেছেন।
সরাইল থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, 'শিশুটির পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তার পিতার পক্ষ থেকে এটিকে হত্যা বলে দাবী করায় এই বিষয়ে একটি ইউডি মামলা দায়ের করে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।