সন্তানের সবচাইতে নিরাপদ আশ্রয়স্থল নাকি মায়ের কোল,অথচ সেই জান্মদাত্রী মা নাকি ঔরস্যজাত সন্তানের ঘাতক! এমনই এক হতভাগ্য সন্তানের মাকে সন্দেহ মূলক গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে ওরস্যজাত সন্তান হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ঘটনা সূত্রে জানাযায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মায়ের পাশে ঘুমিয়ে থাকা ৪ মাসের শিশু হাজেরার মরদেহ গত ২১ অক্টোবর শনিবার সকালে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত হাজেরা উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের প্রবাসী অলিউল্লার মেয়ে। শনিবারের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে অনুসন্ধানে নামে পুলিশ।
নিহত শিশুটির মায়ের আচরণ ও কথা অসংলগ্ন মনে হলে সন্দেহজনক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বেরোয় হত্যাকান্ডের মূল ঘটনা।
শিশুটির জন্মদাত্রী মা নিজেই তার সন্তানকে মধ্যরাতে পুকুরে ফেলে দিয়ে আসে। পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে এই কথা স্বীকার করেছেন রুমা বেগম।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) দৈনিক বায়ান্ন পত্রিকা 'কে বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধারের পরই পারিপার্শ্বিক অবস্থায় নিহত শিশুর মা রুমা বেগমকে সন্দেহ হচ্ছিল, তাই আমরা তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রুমা তার সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, লাশ উদ্ধারের পর নিহত শিশু হাজেরার মা রুমা বেগম পুলিশ জানিয়েছিলেন, শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আমার দুই সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত ২টায় ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাই। তারপর আবার ঘুমিয়েছিলাম। ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠে দেখি ঘরের দরজা খোলা, পাশে আমার ছোট সন্তান হাজেরা নেই। কিভাবে পুকুরে গেলো আমি জানি না। কিন্তু তার এই বক্তব্য ছিল সম্পূর্ণ বানোয়াট।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, রুমা প্রাথমিক অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তার স্বামী সর্বশেষ দেড় বছর আগে আরব আমিরাতের দুবাই গিয়েছেন। তাদের দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় কন্যার বয়স ৬ বছর ও আরেকটির ৪ মাস বয়স। একান্নবর্তী পরিবারের সব কাজ করতে হয় রুমাকে একাই। এনিয়ে শাশুড়ী ও নন্দের অনেক কথাও শুনতে হয়।কন্যা সন্তানের মা হওয়ার কারনে পারিবারিক কলহ ছিলো নৈমিত্তিক ব্যাপার।তাই শিশু সন্তান হাজেরার সঠিকভাবে যত্নও নিতে পারছিল না। এসকল বিষয় মিলিয়ে তিনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। এরই জেরে শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মধ্যরাতে সে তার শিশু সন্তান হাজেরাকে নিজেই বাড়ির কাছাকাছি একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে আসেন।
তাকে রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে প্রেরণ করা হয়ে। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে, এর পিছনে যদি অন্য কিছু থেকে থাকে আশা করছি তদন্তে তা বের হয়ে আসবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম।