নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা সদরে ২০২৩ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদাদাবির অভিযোগে তৎকালীন পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, লোহাগড়া থানার তৎকালীন ওসি নাসির উদ্দিন, ওসি (তদন্ত) হারান চন্দ্র পালসহ ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের ৩৪জন নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিন পিবিআই যশোরকে তদন্ত করে আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মামলা নম্বর এমপি-১২২/২৪ (লোহাগড়া)।
এর আগে গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পারশালনগর গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে লোহাগড়া আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। শরিফুল ছাত্রদল লোহাগড়া উপজেলা শাখার সদস্য বলে জানা গেছে।
এছাড়া মামলায় আসামি করা হয়েছে-এসআই মিজানুর রহমান, এসআই সবুর, লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যুব মহিলা লীগ নেত্রী ফারহানা ইয়াসমীন ইতিসহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৩৪জন নেতাকর্মী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে লোহাগড়া আর্মি ক্যাম্পের সামনে বাদীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। শান্তিপূর্ণ মিছিলের প্রস্তুতি গ্রহণ করার সময় পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা আসামিরা মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় নড়াইলের তৎকালীন পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুনের হুকুমে অন্যান্য আসামিরা বাদীসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। আসামিরা ধাওয়া করে লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিমের বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ২০ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। কিছু মালামালও লুট করে নিয়ে যায়। বাদী দীর্ঘদিন ফরিদপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আসামিরা বাদী শরিফুল ইসলামসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে বলেন-চাঁদা দিবি, না হলে তোদের দেশে থাকতে দেব না। এ ঘটনার সময় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় এবং আসামিদের কয়েকজন পুলিশের সদস্য হওয়ায় তখন লোহাগড়া থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি। বর্তমান সরকারের সময় দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকায় বাদী শরিফুল ইসলাম আদালতে এ মামলা করেন।