ফরিদপুরের সালথায় শত্রুতার জেরে মো. জামাল মাতুব্বর নামে এক মৎসজীবীর পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে অন্তত চার লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাতে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নে গোপালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে বিষ দিয়ে মাছ নিধনের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত তিন ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জামাল মাতুব্বর বলেন, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুকুরে মাছের খাবার দিয়ে বাড়িতে চলে যাই। শুক্রবার সকালে পুকুর পাড়ে এসে দেখি সব মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এতে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরেছে আমার। এ সময় পুকুর পাড়ে ১৬টি গ্যাস ট্যাবলেটের (বিষ) খোশা দেখতে পাই। পরে ট্যাবলেটের খোশাগুলো যাচাই-বাছাই করতে সালথা বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী মানোয়ার হোসেনের কাছে নিয়ে যাই। তখন আমি জানতে পারি বৃহস্পতিবার বিকেলে আমার প্রতিবেশী আবুল বাসার মানোয়ারের কাছ থেকে এক বক্স গাস ট্যাবলেট কিনে নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, শত্রুতা করে আমার প্রতিবেশী আবুল বাসার এ কাজ করেছে বলে আমার ধারণা।
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে সালথা থানায় আবুল বাসারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জানা গেছে, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযুক্ত আবুল বাসারের বাড়িতে তদন্তে যান। এতে আবুল বাসার ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল মাতুব্বরের বাড়িতে গিয়ে তার বিরুদ্ধে কেন থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন- মালেক মাতুব্বর, হুমাইন মাতুব্বর ও রাইফুল মাতুব্বর। তাদের ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত আবুল বাসার বলেন, হালি পেঁয়াজের ক্ষেতের চারপাশে দেওয়ার জন্য আমি এক বক্স করে গ্যাস ট্যাবলেট কিনে আনি। কারো পুকুরে দেওয়ার জন্য কিনে আনি নাই। আর আমার নিজের পুকুরেরও মাছ মরে গেছে। কারণ পুকুরের পাশে আমাদের একটা ভেসাল আছে। কেউ ষড়যন্ত্র করে গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছগুলো নিধন করতে পারে।
সংঘর্ষের বিষয় তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কারণ জানতে জামালের বাড়ি গেলে আমাদের ওপর হামলা করা হয়।
সালথা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার জামান সাবু বলেন, মাছ নিধনের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীকে আইনগত সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে ফেরার পর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে আবার পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। অভিযোগের বিষয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে