এবারেই প্রথম কৃষক অ্যাপে ধান কেনা সুযোগ হয় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে। কিন্তু ধান কেনার কোন সাড়া পড়েনি কৃষক অ্যাপে । সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম চড়া থাকায় কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। সরকারি দাম বাড়লে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান কেনা সম্ভব।
এদিকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যে কৃষক অ্যাপে নিবন্ধন কার্যক্রম। আগামী এপ্রিল মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। বোরো ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অ্যাপে নিবন্ধন ও সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রয়ের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বেশ জোরালো প্রচারণা করছে দপ্তরটি।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ জানায়, অ্যাপের মাধ্যমে গত আমন মৌসুমে ২ হাজার ৭১৫ জন কৃষক নিবন্ধন করেন। পরে লটারিতে ১ হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন ধান কেনার জন্য ৪৮৩ জন কৃষককে নির্বাচন করা হয়। এর মধ্যে বড়বাড়ী ইউনিয়নের খাদেমুল ইসলাম নামে এক কৃষক ৩ টন ধান ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। অন্য কৃষকেরা ধান বিক্রয়ে আগ্রহ দেখাননি।
তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আট ইউনিয়নে আমন ধান চাষাবাদ করেন এমন ৩৭ হাজার কৃষক রয়েছেন। প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও সরকারি গুদামে শুকিয়ে ধান সরবরাহের পদ্ধতিকে অনেকেই অতিরিক্ত ঝামেলা হিসেবে দেখছেন। এ ছাড়া চাষিরা এখন খেতেই ধান মাড়াই শেষে পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে বাজার দর বেশি।
ধান ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘খাদ্যগুদামে শুকনো ধান দিতে হয়। বাজারে কাঁচা ধানের দর আর সরকার নির্ধারিত দাম সমান। ধান শুকাতে গেলে প্রতি মণে ৬ কেজি ধান কমে যাবে। এ কারণেই গুদামে ধান দেয় না কৃষকেরা।’
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র বলেন, গুদামে ধান ক্রয়ে সাড়া পায়নি। কিন্তু সরকারি মূল্য নির্ধারণের প্রভাব আমন ধানের বাজারে ছিল। কৃষকেরা বাজারে ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে পেরেছে। সরকারের উদ্দেশ্য শুধু ধান ক্রয় করা না, বরং বাজার দরের যেন পতন না হয়, কৃষকেরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।