ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীতে এ বছর গমের ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার জেলায় গম উৎপাদন বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। স্থানীয়ভাবে বাজারে গম বিক্রি করে খরচের দ্বিগুণ লাভ উঠে আসছে। এতে গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে সাধারণ কৃষকদের মধ্যে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যা গত বছরের তুলনায় ৫০০ হেক্টর কম। তবে কৃষকেরা বলছেন, বাস্তবে গম আবাদের পরিসংখ্যান আরও কম। কারণ বেশির ভাগ কৃষক গম আবাদ ছেড়ে ভুট্টাসহ অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বালিয়াডাঙ্গী উপজলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, বিস্তৃত মাঠজুড়ে সোনালি রঙের সমারোহ। গাছসহ গমের শিষ পেকে সোনালি রং ধারণ করেছে। কিছু এলাকায় পাকা গম কেটে বাড়িতে নেওয়া শুরু করেছেন কৃষকেরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কৃষক-কৃষাণীরা গম কাটা, শিষ থেকে গম ছাড়ানোসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। যেন কৃষকদের দম ফেলার ফুরসত নেই।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আল মামুন গম আবাদ করেছিলেন চার বিঘা জমিতে। তিনি গম পেয়েছেন ৬৫ মণ। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে তিনি প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ করবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলার রুপগঞ্জ গ্রামের সরিফুল ইসলাম জানান, তিন বিঘা জমিতে গম আবাদে খরচ করেছেন ২৪ হাজার টাকা। আর গম কেটে বাজারে বিক্রি করেছেন ৪২ হাজার টাকা। গমের দাম পেয়ে খুশি তিনি।
মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের নারী শ্রমিক আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘২৮০ টাকা মজুরিতে গম কাটার কাজ করছি। গম কাটার পর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করি। মেশিনের মাধ্যমে মাড়াইও করা হয়।’
কৃষকেরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গম আবাদে ব্যয় হয়েছে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। গমের ফলন হয়েছে প্রতি বিঘায় ১৪ থেকে ১৬ মণ। প্রতি মণ গমের বাজার মূল্য ৯৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় গমের কোনো ক্ষতি হয়নি উপজেলায়। বাজারেও ভালো দাম রয়েছে। শ্রমিক সংকট দূর করতে প্রযুক্তির ব্যবহার করে গম কাটা মাড়াইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’