টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার তিন ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে উপজেলার লামাকাজী, খাজাঞ্চী ও অলংকারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, মসজিদ, স্কুল-কলেজ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
ব্যাপক গতিগ্রস্থ হয়েছে পাকা ধানসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির বাগান। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ভেসে গেছে অনেক ফ্যাসারী ও পুকুরের মাছ।
ইতিমধ্যে লামাকাজী ইউনিয়নের মাহতাবপুর এলাকায় নদীর তীরে চলমান ব্লক বসানোর কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলার (সঠিক সময়ে ব্লক না বসানোর ফলে) কারণে বন্যার পানিতে ভেঙ্গে অনেক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বসতঘর বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার কারণে পরিবার পরিজনের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু নিয়েও বিপাকে রয়েছেন মানুষজন।
সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার কারণে নতুন নতুন আরো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে। এতে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দূর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে। পানি বৃদ্ধির ফলে ইতিমধ্যে সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে জনসাধারণকে ব্যবহার করতে হচ্ছে নৌকা-ভোরা।
এদিকে মঙ্গলবার (১৭ মে) বিকেলে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক নুসরাত জাহান।
অন্যদিকে বন্যার পানিতে নিমজ্জিল এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা ও রোগীরা পড়েছেন বিপাকে।
উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল বলেন, বন্যার পানিতে ইতিমধ্যে ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড নিমজ্জিত হয়ে গেছে। আর যে হারে পানি বাড়ছে তাতে পুরো ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে।
উপজেলার মাহতাবপুর এলাকার নদীর তীরে ব্লক বসানোর কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে অনেক বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে জানিয়ে লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই বন্যার পানি প্রবেশ করছে। বেশির ভাগ গ্রামের মানুষ পানি বন্দি রয়েছেন। এলাকার নিম্নাঞ্চল রাস্তাগুলোও তলিয়ে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক নুসরাত জাহান বলেন, বিশ্বনাথের বন্যা পরিস্থিতি খারাপ অবস্তার মধ্যে রয়েছে। এরজন্য প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়ণ কেন্দ্র হিসেবে প্রয়োজনের ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে ত্রাণের জন্য ৬ মেট্টিক টন চাল পেয়েছি। আরো ত্রাণের জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সঠিক সময়ে ব্লক না বসানোর ফলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার বিষয়টিও স্যারদের জানানো হয়েছে। সর্বোপরী পুরো পরিস্থিতিতে প্রশাসনের নজরদারী রয়েছে।