যশোরের বেনাপোলে স্থলবন্দরের গাজীপুর ৬ নং গেটের বিপরীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আপন বড় ভাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোকান ঘর ভাংচুর ও দখল করে নিয়েছে তার ছোট ভাই নুর ইসলাম। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তার মায়ের সম্পত্তিতে দোকান ঘর নির্মান করে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন বড় ভাই মাহে আলম। সম্প্রতি তার মা আমেনা বেগম মারা যাওয়ার আগে তাদের ৫ ভাইয়ের মধ্যে রাস্তার সাথে ৫টি দোকানের জায়গা ও বসবাসের জন্য বাড়িতে প্রবেশের রাস্তাসহ সম্পত্তি ৫ ছেলের নামে হেবার মাধ্যমে বন্টন করে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসলেও কখনও কোন সমস্যার সম্মুখীন হননি মাহে আলম। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে এশিয়ান হাইওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা চললে হঠাৎ করে মাহে আলমের তৈরীকৃত দোকান ঘরের জায়গা নিজের বলে দাবি করে দোকান ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে বলে তার ছোট ভাই নুর ইসলাম।
পরবর্তীতে সমস্যা নিরসনের জন্য মাহে আলম স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পৌরসভার বিচার দিলেও সমস্যা সমাধান না হওয়ায় যশোর যুগ্ন জজ আদালতে বাদী হয়ে দেওয়ানী মামলা করে মাহে আলম। যার নং ১৬১/২১। আদালতে দেওয়ানী মামলা চলমান অবস্থায় কয়েক দফা সন্ত্রাসী দিয়ে দোকান ঘর ভাংচুর ও দখলের চেষ্টা করলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মাহে আলম দোকান ঘরে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত হতে অত্র দোকান ঘরে ১৪৪/১৪৫ ধারার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে কিছুদিন শান্ত থাকার পর গতকাল শুক্রবার ভোরে সম্পূর্ণ দোকান ঘরটি ভেঙ্গে ফেলে তার আপন ছোট ভাই নুর ইসলাম। আদালতের নিষেধাজ্ঞা চলমান অবস্থায় দোকান ঘর ভাংচুর করলে আইনগত সহায়তা পাওয়ার লক্ষে বেনাপোল পোর্ট থানাতে অভিযোগ দায়ের করে মাহে আলমের ছেলে ইমরান হোসেন।
এ বিষয়ে মাহে আলমের বড় ছেলে ইমরান হোসেন বলেন, আমার চাচা স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে চলাফেরা করায় বিভিন্ন সময়ে দোকান ঘরটি দখলের উদ্দেশ্যে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। সর্বশেষে গতকাল ভোরে দোকান ঘরটি সম্পূর্ণ রুপে ভেঙে ফেলে। আমরা এ বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেছি এবং আদালতে দোকান ঘরটি পূর্ণদখল ও মেরামতের আবেদন করেছি, আমরা আইনগত ভাবে দোকান ঘরটি পেতে চাই।
এ বিষয়ে মাহে আলমের অপর ৩ ভাই শাহজাহান, রুহুল আমীন ও আব্দুল খালেক বলেন, আমাদের মা আমাদের মধ্যে সবার একটি করে দোকান ঘর ও বসতবাড়ির জায়গাসহ সমপরিমানে সকলকে ভাগ বন্টনের মাধ্যমে হেবা করে দেন। আমাদের ছোট ভাই নুর ইসলাম অন্যায় ভাবে বড় ভাইকে হেয় প্রতিপন্ন করছে এবং তার পাওনা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করছে।
এ ব্যাপারে নুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকা অবস্থায় দোকান ঘর ভাংচুরের অভিযোগ পেয়েছি। সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।