লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় চার সাংবাদিকের রিমান্ড ও জামিন শুনানি আগামী ৩ নভেম্বর।
মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল হোসেন শুনানির জন্য ওই দিন ধার্য করেন।
হুমকি ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার সাংবাদিকের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। গত সোমবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে গত রোববার পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে মোস্তফা তারেক ইকবাল ওরফে রবিন পাটওয়ারী (৪০) নামের ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। তিনি পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের রামগঞ্জ শাখায় জুনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রবিন পাটওয়ারী লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকার মোস্তফা কামালের ছেলে।
চার সাংবাদিকের আইনজীবী এডভোকেট মো. খোরশেদ আলম বলেন, গত সোমবার বিকেলে মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। কিন্তু বিকেলে আদালতে বিচারক না থাকায় তাদের জামিন আবেদনের শুনানি হয়নি। এদিকে রাষ্ট্রপক্ষও রিমান্ডের আবেদন করেন সাত দিনের। মঙ্গলবার আদালত জামিন ও রিমান্ডের আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৩ নভেম্বর ধার্য করেছেন।
এ ঘটনায় গত সোমবার সকালে ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী শারমিন আক্তার বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এতে ইত্তেফাকের প্রতিনিধি জাকির হোসেন মোস্তান, যায়যায়দিনের বেলায়েত হোসেন, সমকালের জাকির হোসেন ও মানবকণ্ঠের শাখাওয়াত হোসেনকে আসামি করা হয়। পরে বিকেলে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য আটক চার সাংবাদিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। তারা চারজনই পত্রিকাগুলোর রামগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
নিহত ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের রামগঞ্জ শাখার ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত চলছে। এ বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকবার তার স্বামীর সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা হয়। সবশেষ গত রোববার দুপুরে সাংবাদিকেরা আবারও ব্যাংকের ওই শাখায় যান। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বিবি রাহিমা বেগম ট্রেনিংয়ে থাকায় দায়িত্বে ছিলেন ইকবাল। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। চার সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে আসছিলেন। রোববারও দাবিকৃত টাকার জন্য চাপ দেন তারা। একপর্যায়ে তাদের চাপ সইতে না পেরে বহুতল ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাদের হুমকির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে রামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. ফারুক হোসেন গ্রেপ্তার ওই চার সাংবাদিকের বরাত দিয়ে জানান, বিষয়টি নিয়ে চার সাংবাদিকের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের কাছে তারা অনিয়মের তথ্যের জন্য গিয়েছেন। রবিন পাটওয়ারীর সঙ্গে তাদের কোনো কথা হয়নি। হুমকি, টাকা দাবি ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ সঠিক নয়। তাদেরকে ফাঁসানোর জন্যই এখন মামলা করা হয়েছে।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাসার বলেন, হুমকি ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় চার সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। গত সোমবার তাদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
বায়ান্ন/এসএ