ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার ভূমি অফিসে সরকারি ফির অতিরিক্ত টাকা না দিলে সেবা থেকে বঞ্চিত ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সেই সাথে সকল নিয়মনীতি তোয়াক্কা ও এসি ল্যান্ডকে না জানিয়ে বছর জুড়ে তানিয়া বেগম নামে এক নারীকে ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)পদে ভূমি সংক্রান্ত কাজ করার জন্য রাখার প্রমাণ মিলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি জমির খারিজ বা নামজারি করতে সরকার নির্ধারিত খরচ ১১৭০ টাকা হলেও দলিলভেদে নেওয়া হয় ৫-১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। অথচ নামজারির আবেদনের জন্য কোর্ট ফি ২০ টাকা, নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা, রেকর্ড সংশোধন বা হালকরণ ও মিউটেশন খতিয়ান সরবরাহ বাবদ ১১০০ টাকার বাইরে আর কোনো খরচ নেই।
সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, ভূমি সংক্রান্ত কোনো কাজে অনলাইনে অফিস থেকে আবেদন না করলে বা বাড়তি দেওয়া টাকার পরিমাণ কম হলে সারাদিন বসিয়ে রাখেন উপ-সহকারী কর্মকর্তা কমল রঞ্জন দাস। এমনকী সকাল ৯টার পরিবর্তে তিনি অফিসে আসেন দুপুর ১২টায়।
এমন দৃশ্য সরেজমিনে আজ রোববার গিয়ে সত্যতা মিলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘বাঞ্ছারামপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দুর্নীতি চরমে পৌঁছেছে। সরকারি নীতিমালার বাইরে চুক্তি অনুযায়ী মোটা অঙ্কের ঘুস ছাড়া নামজারি হয় না। নামজারির জন্য মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়।’
ভুক্তভোগী আব্দুল হাই বলেন, ‘আমার জমি খারিজ করতে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন উপ-সহকারী কর্মকর্তা কমল রঞ্জন। আমার পাশের একটি জমি খারিজ করে দেওয়ার নাম করে এক ব্যক্তির সঙ্গে ১১ হাজার টাকার মৌখিক চুক্তি করেছেন। এরই মধ্যে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। বাকি আট হাজার টাকা কাজ শেষ হলে নেবেন।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাঞ্ছারামপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা কমল রঞ্জন দাস। তিনি বলেন, ‘অফিসে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত লোকবল নেই। একসঙ্গে আমাকে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই অনলাইনের বিভিন্ন কাজ করার জন্য একজনকে (তানিয়া) এখানে সাময়িকভাবে রেখেছি।’
দেরিতে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজের জন্য অফিসে আসতে দেরি হয়। জমি খারিজে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হয় না বলেও দাবি করেন তিনি।যদি বেশী নেয়,সেটি এসি ল্যান্ড অফিস নেন।
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (এসি ল্যান্ড) মো.নজরুল ইসলাম দুপুরে বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বিনা অনুমতিতে বিলম্বে অফিসে আসা, গ্রাহকের সাথে দূর্ব্যবহার, বাড়তি ফি নেয়া ও জনৈক নারীকে রাখতে পারেন না। আমি অবিলম্বে ব্যবস্থা নিবো।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ