ঢাকা, সোমবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯শে পৌষ ১৪৩১

ভোটার উপস্থিতি কম হলেও এমপি গ্রহণযোগ্য হবেন: ইসি আহসান হাবিব

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৫৭:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক পদ, সংবিধান সুরক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। ভোটার উপস্থিত করানো প্রার্থীর দায়িত্ব, ভোটার উপস্থিতি কম হলেও এমপি গ্রহণযোগ্য হবেন।’

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কুষ্টিয়া, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

সভায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসানসহ অন্যান্য জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিজিবি কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সেক্টরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘আসন্ন সংসদ নির্বাচন হবে ব্যালটে। তবে ইভিএম'র মতো স্বচ্ছতা থাকবে না ব্যালটে। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন্দ্রে কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রার্থীর এজেন্টরা স্বচ্ছতা নিশ্চিতেও কাজ করবেন। তারা দেখবেন যেন একজন অন্য জনের ভোট না দিতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ইভিএম ছিল স্বচ্ছতার প্রতীক, এতে আমার আস্থা আছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দলের সদস্যরা বলে এটা যাদুর বাক্স, তারা এটাকে চাইনি। অথচ সেখানে সিসি ক্যামেরা ছিল পর্যবেক্ষণ করতাম আর ভোটার বোতাম টিপে তার পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে পারত। তবে এখানেও কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচন নির্বাচনের মতোই হবে।’

নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়াল আছে সেখানে আচরণ বিধিসহ সব বিষয় লিপিবদ্ধ আছে। এটাকে শতভাগ পালন করে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তাই একমাত্র অধিনায়ক। তিনিই সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবেন। আমাদের আইনগুলো পরিবর্তন করেছি। অনেক টকশোতে মিষ্টি কথা আসে যে, আমাদের পায়ে আমরা কুড়াল মেরেছি। প্রতিটা আইনের মাধ্যমে জেল-জরিমানার বিধান রেখে আপনাদের সুরক্ষা করেছি। একটা নীতিমালা করেছি যাতে করে গণমাধ্যমকর্মীরা ভিতরে যেতে পারবেন, ছবি তুলবেন, বাইরে লাইভ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার ভাবে এই সভায় বলে গেলাম কোনো ছাড় নেই অনিয়ম হলে। কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার কোনো অসঙ্গতি দেখলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেবে। এতেও নিয়ন্ত্রণ না হলে ওই কেন্দ্রে ভোট বন্ধ থাকবে। সেখানে পরে পুনরায় ভোট নেওয়া হবে।’

ইসি আহসান হাবিব বলেন, ‘পরিষ্কার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন লোকাল প্রশাসন বিবেচনা করে মোটরসাইকেলের অনুমতি দেবে। কারণ আগের তুলনায় এখন মোটরসাইকেল বেড়েছে আর তার মাধ্যমেই কালো টাকা দেখা যায়। আর তাদের মাধ্যমেই নির্বাচনে অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই খুব সীমিত আকারে যারা ব্যবহার করবেন তাদের সব বৈধ কাগজ থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন আইনে-বাসা থেকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার সময় যদি কোনো ভোটার বাধাগ্রস্ত হন তাহলে দোষীকে তিন থেকে পাঁচ বছর জেল দেওয়া হবে অপরাধ বিবেচনা করে। যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে কেন্দ্রে থাকবেন তারা এ আইনের প্রয়োগ করবে।’

বিদেশিদের প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যারাই আমাদের কাছে এসেছে (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত) তাদের প্রশ্ন করেছি, আমরা যে ২১ মাসে ১৩০০ নির্বাচন করেছি, আপনাদের কি কোনও অবজারভেশন নেই? আরও কী করলে ভালো হয়? তাও তারা কোনও কথা বলেন না। তারা জানে, আমরা সাংবিধানিক পদে আছি। সাংবিধানিকভাবেই নির্বাচন করছি। সংবিধান সুরক্ষায় নির্বাচন করাটা জরুরি।’

ইসি আহসান হাবিব জানান, ‘নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও বসব।’

সভায় নির্বাচন কমিশনার পাঁচ জেলার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নানান দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।